শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বাড়ি ভাড়া, মেডিকেল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত ১৬কেজি গাঁজাসহ ২জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার অসহায় বিধবার জমি দখলের পায়তারা ভূমিদস্যুর গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৫ সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কার জনক পুলিশি হামলার প্রতিবাদে- অবস্থান কর্মসূচী অনুষ্ঠিত ডিলারগণ কৃত্রিম সার সংকট সৃষ্টি করে দীর্ঘদিন যাবত উচ্চমূল্যে সার বিক্রয় করে এরই প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত ১০দিন ব্যাপী ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠিত ৭৩২বোতল এস্কাফ এবং ১০০পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট জব্দসহ ৪জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার
গার্মেন্টস কর্মী মৌসুমীর মৃত্যু রহস্য খুঁজতে তদন্তে নেমেছে বিভিন্ন সংস্থা

গার্মেন্টস কর্মী মৌসুমীর মৃত্যু রহস্য খুঁজতে তদন্তে নেমেছে বিভিন্ন সংস্থা

মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ, লালমনিরহাট:

 

লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের গার্মেন্টস কর্মী মৌসুমী আক্তারের মৃত্যুকে ঘিরে নতুন নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। রংপুর মহানগর পুলিশ মৌসুমীর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দাফনের জন্য তার বাবা গোলাম মোস্তফার কাছে হস্তান্তর করলেও সেই লাশ দাফন না করে তিস্তা নদীতে কারা ফেলে দিলো? লাশ যাতে এলাকায় নিয়ে আসা না হয় এ জন্য কারা বুড়িমারীতে বিক্ষোভ করল? সুস্থ মৌসুমী আক্তার কীভাবে ট্রাকে মারা গেলেন? ট্রাকচালক ও হেলপারকে আটকের পরও কী কারণে পুলিশ তাদের ছেড়ে দিলো? এসব রহস্যময় প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্তে নেমেছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা।

 

পুরো ঘটনা নিয়ে মেয়ের বাবা গোলাম মোস্তফা, মা সাহেরা বেগম, তার দুই বোন শান্তনা ও রুমানা এবং লাশ পরিবাহনকারী গাড়ির চালক ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। তবে এ মৃত্যুকে ঘিরে নানা প্রশ্নের উত্তর বের করতে ও প্রকৃত রহস্য খুঁজতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা তদন্তে নেমেছে। ইতিমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা মৌসুমীর বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের একাধিক বার কথা বলেছেন।

 

জানা যায়, মৃত পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে ও একই উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী। গত ২৪ মে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী এলাকায় তিস্তা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

 

মৌসুমী আক্তারের বাবা গোলাম মোস্তফার দাবি, তার মেয়ের লাশ করোনা রোগী সন্দেহে এলাকায় নিয়ে এসে দাফনে বাধা পাওয়ায় রংপুরের এক লাশ পরিবহনকারী গাড়ির চালকের কাছে লাশ হস্তান্তর করে দাফনের জন্য ৫হাজার টাকা দিয়ে তিনি বুড়িমারীতে চলে আসেন। পরে ওই চালক লাশ কি করেছেন তা তিনি জানেন না।

 

কিন্তু ওই লাশ পরিবহনকারী গাড়ির চালকের বক্তব্য একেবারে ভিন্ন। তিনি জানান, মৌসুমীর লাশ রংপুর থেকে পাটগ্রামের বুড়িমারী নিয়ে যাওয়ার পথে বড়খাতা এলাকায় তার বাবা লাশটি নামিয়ে নেয়। ওই স্থানে লাশ নামিয়ে দিয়ে তারা গাড়ি নিয়ে চলে যায়।

 

তবে মৌসুমীর দুই খালাতো বোন শান্তনা ও রুমানার দাবি অন্যরকম। তাদের দাবি, তাদের বোন মৌসুমীর লাশ যখন গাড়িতে তোলা হয় পাটগ্রাম নিয়ে আসার জন্য। তখন ওই গাড়িতে তাদের খালু মৌসুমীর বাবা ছিলেন। লাশ জলঢাকা নিয়ে আসা পর্যন্ত লাশের সঙ্গে তাদের খালু গাড়িতেই ছিলেন। এরপর সবার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

 

মৌসুমীর মা সাহেবা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে যাই। চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় আমার মেয়ের লাশ রংপুর থেকে পাটগ্রামে নিয়ে আসার প্রস্তুতি গ্রহণ করি। কিন্তু পথিমধ্যে কে লাশ নদীতে ফেলে দিলো তা জানি না। লাশ এলাকায় নিয়ে আসার জন্য চেয়ারম্যান আমাদের সহযোগিতা করেছেন।

 

বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত সাংবাদিকদের বলেন, একটি সুস্থ মেয়ে ঢাকা থেকে রংপুর আসার পথে কীভাবে মারা গেল? সেই লাশ পুলিশ তার বাবার কাছে দাফনের জন্য হস্তান্তর করার পরও তিস্তা নদীতে কারা ফেলে দিলো? পাশাপাশি পুরো ঘটনা নিয়ে মেয়ের বাবা গোলাম মোস্তফা, মা সাহেরা বেগম, তার দুই বোন শান্তনা ও রুমানা এবং লাশ পরিবহনকারী গাড়ির চালক ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য থেকে নতুন নতুন প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। তাই প্রকৃত রহস্য বের করতে প্রশাসনকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাক তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। একটি মহল আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করছেন।

 

পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন কুমার মোহন্ত সাংবাদিকদের বলেন, পুরো ঘটনা নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। ফলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বিষয়টি গুরুত্বর সহকারে তদন্ত করছেন।  প্রকৃত রহস্য বের করতে একটু সময় লাগবে।

 

উল্লেখ্য, মৌসুমী নামে এক গার্মেন্টস কর্মী ঢাকা থেকে তার বাড়ি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে ফেরার পথে ২২ মে ট্রাকে রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার হয়। তার লাশ রংপুর তাজহাট থানা পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে ২৩ মে তার বাবার কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু লাশ দাফন না করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ২৪ মে মৌসুমির লাশ লালমনিরহাটের আদিতমারী এলাকায় তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone