শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
আকবরিয়া সুইটস এন্ড কনফেকশনারি-এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ খেলাধূলা ইএসডিও’র কার্যালয়ে তথ্য সংগ্রহে গেলে লাঞ্চিত ৩ সাংবাদিক; থানায় অভিযোগ শহীদ আবুল কাশেম-এঁর ৫৪তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা, আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বিজিবি’র বিশেষ অভিযানে ভারতীয় ইস্কাফ সিরাপ জব্দ রেলওয়ের গণশুনানিতে অভিযোগ; তদন্ত কমিটি গঠন জন প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে- বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠিত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সম্মেলন অনুষ্ঠিত
প্রকৃতি থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে বেল গাছ

প্রকৃতি থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে বেল গাছ

লালমনিরহাটে প্রকৃতি থেকে ক্রমেই হারিয়ে যেতে বসেছে বেল গাছ। সু-স্বাদু ফল ও ভেষজগুণ সম্পন্ন বেল গাছ আগে বাসা-বাড়ির পরিত্যাক্ত কোন জায়গায়, রাস্তার ধারে, পথে প্রান্তরে আপনা-আপনি ভাবে জন্মাতে দেখা যেত। আপনা-আপনি অবহেলা আর অনাদরে জন্মায় বলে বেল-এর গুরুত্বটা আমাদের কাছে তেমন ভাবে নেই বললেই চলে। অথচ দেশীয় প্রজাতির এই বেল গাছটির ফল অত্যান্ত সু-স্বাদু ও বেল গাছ আমাদের অনেক উপকারে আসে। সেই প্রাচীন কাল হতে এর ফল, পাতাসহ বেল গাছটিই আমাদের নানা রোগের মহাষৌধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর গুনাগুণ আমরা সবাই জানি ও বুঝি। এতো কিছু জানা ও বুঝার পরেও শুধুমাত্র অনাদরে আর অবহেলার কারনেই প্রকৃতি হতে হারিয়ে যেতে বসেছে এই মহামূল্যবান বেল গাছটি। প্রকৃতির এই অমূল্য সম্পদটিকে আমরা নির্বিচারে কেটে শেষ করে ফেলছি। আমরা সবাই জানি, প্রকৃতি সব সময় মানুষকে বুকে আগলে রাখার পাশাপাশি তার সবটুকু উজাড় করে দেয়। কখনও কোনদিন নিজেকে বিলিয়ে দিতে বিন্দু মাত্র কার্পন্য করে না। আর আমরা প্রকৃতির এই অমূল্য সম্পদগুলোকে সব সময় নিজের মতো করে ব্যবহার করেই চলছি। নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার্য এই মহামূল্যবান সম্পদকে রক্ষা করার তাগিদ অনুভব করছিনা কখনও। আর অনুভব করছিনা বলেই মহামূল্যবান সম্পদগুলো আজ প্রকৃতি হতে হারিয়ে যাচ্ছে।
শুধুমাত্র অবহেলা আর অনাদরে আপনা-আপনি বেড়ে ওঠা মহামূল্যবান উদ্ভিদগুলোর আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এই মূল্যবান উদ্ভিদগুলোর অস্তিত্ব সংকটের মূল কারণ; জ্বালানী সমস্যার কারণে নির্বিচারে কেটে ফেলে ধ্বংস করা হচ্ছে। আর এভাবেই প্রকৃতি হতে হারিয়ে যাচ্ছে এই মূল্যবান উদ্ভিদগুলো। এরই মধ্যে অসংখ্য উদ্ভিদ হারিয়ে গেছে। বর্তমানে হারিয়ে যাওয়ার তালিকায় রয়েছে বেল গাছ।
আগে বাংলাদেশের সব অঞ্চলে বেল নামক গাছটির দেখা মিললেও বর্তমানে আর চোখেই পড়ে না।
সরেজমিনে ঘুরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর বেল গাছ নামক গাছটির দেখা মেলে লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামে। কাছে গিয়ে দেখা যায়; বিলুপ্তপ্রায় ভেষজগুণ সম্পন্ন বেল নামক গাছটি তার অস্তিত্ব জানান দিয়ে বলছে, এখনও আমার অস্তিত্ব শেষ হয়ে যায়নি, তবে আমি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, পারলে আমাকে রক্ষা করো।
বেলের বৈজ্ঞানিক নাম-এ্যায়িগেল মারমিলস, গোত্রের নাম-রুটাসি।
ফুলগাছ গ্রামের হযরত আলী বলেন, ছোট বেলা হতে দেখছি আমাদের এলাকায় অনেক বেল গাছ ছিল। তবে এখন আর তেমন ভাবে চোখে পড়ে না। আগে আমরা গরমের দিনে পাকা বেল দিয়ে শরবত তৈরি করে খেতাম।
গ্রাম্য কবিরাজ কাশেম আলী বলেন, বেল গাছ মানুষের অনেক উপকারে আসে। বিশেষ করে পুরুষদের দুর্বল পুরুষাঙ্গ সবল ও সতেজ করতে বেলের জুড়ি নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের স্মরণ শক্তি বৃদ্ধিতে বেল পাতা ঘিয়ে ভেঁজে খাওয়ালে অনেক উপকার হয়। এক চা চামচ বেল পাতার রস খেলে জ্বর সর্দি ভাল হয়ে যায়।
হরিপদ রায় হরি বলেন, আমাদের হিন্দু ধর্মীয় মতে, বেল একটি পবিত্র গাছ। বেল পাতা ছাড়া পূজা সম্পন্ন হয় না।
কবি কমল কান্তি বর্মণ বলেন, আমাদের নিজেদের স্বার্থে দেশীয় প্রজাতির এই পবিত্র গাছটিকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
কবি ও সাংবাদিক হেলাল হোসেন কবির বলেন, আগে বেল গাছ প্রচুর পরিমানে যেখানে সেখানে দেখা গেলেও বর্তমানে এ গাছটি খুব কম চোখে পড়ছে। গাছটি মানুষের অনেক কাজে লাগে। দেশীয় প্রজাতির এ গাছটিকে আমাদের প্রয়োজনেই রক্ষা (সংরক্ষণ) করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যত প্রজন্ম জানতেই পারবে না বেল গাছের নাম।
ফুলগাছ ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম খন্দকার বলেন, বেল গাছ নামক উপকারী গাছটি আর চোখে পড়ছে না। দেশীয় প্রজাতির ভেষজগুণ সম্পন্ন এ উদ্ভিদটিকে আমাদের প্রয়োজনেই রক্ষা করতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone