সীমান্তে লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি)’র মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে ভারতীয় ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট, ফেন্সিডিল ও ইস্কাফ সিরাপ এবং মদ জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি)’র এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি জানিয়েছেন।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চলমান চোরাচালান ও মাদক বিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন বিওপির টহলদল ৩টি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট, ফেন্সিডিল, ইস্কাফ সিরাপ ও মদ জব্দ করেছে। চোরাচালান প্রতিরোধের মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা ও মাদক বিরোধী অভিযানে বিজিবি’র দৃঢ় অবস্থানের প্রমাণ মিলেছে।
বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রে বিজিবি জানতে পারে যে, চোরাকারবারীরা সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার করবে। উক্ত তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা ৩০মিনিটে বালারহাট বিওপি’র আওতাধীন কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার বালাটারী নামক স্থানে বিজিবি’র টহলদল বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালীন ১জন চোরাকারবারীকে বাই সাইকেল যোগে আসতে দেখে টহলদল চ্যালেঞ্জ করলে উক্ত ব্যক্তি বাই সাইকেল ফেলে ভারতের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়। উক্ত স্থানে তল্লাশী করে ৪শত ৪পিছ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ ১টি বাই সাইকেল জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ১২টা ৩০মিনিটে ঝাউরানী বিওপি’র আওতাধীন লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা থানার উত্তর ঝাউরানী নামক স্থানে টহল পরিচালনাকালীন চোরাকারবারীদের গতিবিধি টের পেয়ে টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে চোরাকারবারীরা তাদের সাথে থাকা মালামাল ফেলে দৌড়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে চলে যায়। চোরাকারবারীদের ফেলে রাখা মালামাল তল্লাশী করে ভারতীয় ইস্কাপ সিরাপ ২০টি বোতল এবং ভারতীয় ফেন্সিডিল ১১টি বোতল জব্দ করা হয়।
এছাড়াও, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দিন আনুমানিক ২টা ২০মিনিটে অনন্তপুর বিওপি’র আওতাধীন কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার পশ্চিম রামখানা এলাকায় টহলদল ১জন চোরাকারবারীকে আসতে দেখে চ্যালেঞ্জ করলে মালামাল ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত স্থানে তল্লাশী করে ভারতীয় মদ ৩টি বোতল জব্দ করা হয়।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর অধিনায়কের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট ৪শত ৪পিছ, যার সিজার মূল্য ৪০হাজার ৪শত টাকা, ভারতীয় ইস্কাফ সিরাপ ২০টি বোতল, যার সিজার মূল্য ৮হাজার টাকা, ভারতীয় ফেন্সিডিল ১১টি বোতল, যার সিজার মূল্য ৪হাজার ৪শত টাকা, ভারতীয় মদ ৩টি বোতল, যার সিজার মূল্য ৪হাজার ৫শত টাকা এবং বাই সাইকেল ১টি যার সিজার মূল্য ৮হাজার টাকাসহ সর্বমোট সিজার মূল্য ৬৫হাজার ৩শত টাকা। এ ঘটনায় আটকৃত আসামীর বিরুদ্ধে ভুরুঙ্গামারী থানায় মামলা দায়েরপূর্বক মাদকদ্রব্যসহ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া মাদক সংশ্লিষ্ট অন্যান্য চোরাকারবারীদের তথ্য সংগ্রহপূর্বক মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম পিএসসি বলেন, দেশের যুব সমাজকে মাদক মুক্ত রাখতে বিজিবি সর্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছে। মাদক পাচার রোধে সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে বিজিবি’র গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল তৎপরতা আরও জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া তিনি স্থানীয় জনগণকে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা এবং প্রতিরোধে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং গোপন তথ্য প্রদানকারীদের পরিচয় গোপন রাখার নিশ্চয়তা দেন।
এই অভিযানে বিজিবির সাহসিকতা ও কৌশলগত দক্ষতা প্রশংসার দাবিদার, যা মাদক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।