শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে আমন চাষাবাদে বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের! স্বাধীনতার ৫৩বছর পেরিয়ে গেলেও লালমনিরহাটের খোরারপুলে হয়নি সেতু! লালমনিরহাটে মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত হাত বদলে বাড়ে সবজির দাম; বঞ্চিত হন লালমনিরহাটের চাষিরা! ছাত্রদলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি; মুছলেকা দিয়ে ছাড়া পেলো যুবক! বিজিবি ও ছাত্রজনতা স্বেচ্ছাশ্রমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সীমান্ত রাস্তা মেরামত! লালমনিরহাটের চাষীদের বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে লালমনিরহাট জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে বিলুপ্তির পথে মাষকলাই (ঠাকরি কালাই) চাষ! লালমনিরহাটে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জনসচেতনতা মূলক নাটক প্রদর্শন অনুষ্ঠিত
দৃষ্টিনন্দন ফুল “কচুরিপানা” ফুটেছে লালমনিরহাটে!

দৃষ্টিনন্দন ফুল “কচুরিপানা” ফুটেছে লালমনিরহাটে!

আবহমান গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত সাধারণ একটি জলজ উদ্ভিদের নাম “কচুরিপানা”। লালমনিরহাটসহ বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেক এলাকায় হাওর-বাঁওড়-খাল-বিল আর শস্য-শ্যামল সবুজে ভরপুর ছোট বড় হাওর, বিল, ঝিল ও বাড়ির পাশের ডোবায় এখন ফুটেছে দৃষ্টিনন্দন কচুরিপানা ফুল দেখতে পাওয়া যায়। এটি একটি বহু-বর্ষজীবী ভাসমান জলজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Eichhornia crassipes।

 

বাংলাদেশের বিল-ঝিল-হাওর-বাঁওড়ে বিভিন্ন জাতের বিভিন্ন রঙের ফুল ফোটে বিভিন্ন ঋতুতে। এসবের মধ্যে কিছু আছে যা আমাদের কাছে সৌন্দর্য বর্ধক, দৃষ্টিনন্দন, উপকারী কচুরিপানা বিভিন্ন নদী-নালা-খাল বিল, পুকুর, ডোবায় ও জলাশয়ে ফুটে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দেয় এবং জৈব সার তৈরিতে সাহায্য করে। কচুরিপানা ও তার ফুল জনপ্রিয় না হলেও বিভিন্ন সময়ে মাছ, গবাদিপশুর খাদ্য ও জৈব সার হিসেবে এর ব্যবহার হয়ে থাকে।

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভার নদী-নালা, খাল-বিলে কচুরিপানার দেখতে পাওয়া যায়।

 

জানা যায়, কচুরিপানা হলো ভাসমান এমন একটি প্রাকৃতিক জলজ উদ্ভিদ যার উৎপত্তিস্থল ব্রাজিল (আমাজন), এর ৭টি প্রজাতি রয়েছে। গ্রীষ্মম-লীয় এলাকায় এটি খুব দ্রুত বংশবিস্তার করে, এমনকি ৬ দিনেরও কম সময়ে সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়। দেখার দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে কচুরি ফুলের মতো এত চমৎকার ফুল খুব কম আছে। পরিমাণগত দিক দিয়েও এর মতো এত ব্যাপক বিস্তৃত ফুল খুব কমই দেখতে পাওয়া যায়। কবিগুরুর ভাষায়- ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া/ ঘর হতে শুধু দু’পা ফেলিয়া।’ সত্যিকার অর্থেই যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এক আগাছা উদ্ভিদ যার কিনা উপকারের চেয়েও অপকারী দিক কোনো অংশেই কম না, এমন এক অবহেলিত উদ্ভিদে এত নয়নাভিরাম, মনোমুগ্ধকর, চিত্তাকর্ষক ফুল যা প্রকৃতিপ্রেমীদের বিমুগ্ধ না করে পারে না।

 

আমাদের দেশের কৃষকেরা আলু, পটোলসহ বিভিন্ন সবজি চাষে কচুরিপানার সার ব্যবহার করে থাকেন। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা জলাশয় থেকে কচুরিপানার ফুল উঠিয়ে খেলা করে। মেয়েরা খোপায় বাঁধে। কচুরিপানার ৭টি প্রজাতি আছে। এর পুরু চকচকে এবং ডিম্বাকৃতির পাতা পানির উপরি ভাগে প্রায় ১মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। এর কাণ্ড দীর্ঘ, বহু বিভক্তি মূল বের হয়। যার রঙ বেগুনি, সাদা, গোলাপি ও হলুদ। একটি পুষ্প থেকে ৯ থেকে ১৫টি আকর্ষণীয় পাপড়ির ফুলের থোকা বের হয়। কচুরিপানা খুব দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে। এটি প্রচুর পরিমাণে বীজ তৈরি করে। ৩০বছর পরও অঙ্কুরোদগম ঘটাতে পারে। কৃষি বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরি করতে সময় লাগে ৭০দিন; কিন্তু কচুরিপানা থেকে সময় লাগে ৫৫দিন। কচুরিপানাতে বড় বড় কুঠুরি থাকে যা পানিতে পরিপূর্ণ সামান্য আগাতে সহজে ভেঙে যায়।

 

আরও জানা যায়, অর্কিড সাদৃশ্য ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে স্কনক নামে এক ব্রাজিলিয়ন পর্যটক ১৮শ’ শতাব্দীতে বাংলায় নিয়ে আসেন কচুরিপানা। এরপর থেকেই বাংলার প্রায় প্রতিটি হাওর-বাঁওড়-জলাশয়ে ভরে যায়।

 

কচুরিপানা দেখতে গাঢ় সবুজ হলেও এর ফুলগুলো সাদা পাপড়ির মধ্যে বেগুনি ছোপযুক্ত এবং মাঝখানে হলুদ ফোঁটা থাকে। সাদা এবং বেগুনি রঙের মিশেলে এক অন্যরকম আবহ তৈরি করে। সাদা পাপড়ির স্থলে কোথাও হালকা আকাশি পাপড়িও দেখতে পাওয়া যায়।

 

পুরোপুরি ফুল ফোটার আগে একে দেখতে অনেকটা নলাকার দেখায়। পাপড়িগুলোর মাঝখানে পুংকেশর দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিটি ফুলে ছয়টি করে পাপড়ি দেখা যায়। এলাকাভিত্তিক অনেকে একে একেক নামে চিনে থাকে। বাংলাদেশে প্রায় সাত প্রজাতির কচুরি দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় সারা বছরই কচুরি ফুল ফুটতে দেখা যায়। কচুরি ফুলের মুগ্ধতায় আমাদের মধ্যে প্রকৃতি প্রেম জাগ্রত হোক।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone