শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে তিস্তা নদী এখন আবাদি জমিতে পরিণত লালমনিরহাট মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র‍্যালি, আলোচনা সভা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে ৬২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (ভারপ্রাপ্ত বা চলতি দ্বায়িত্ব)র প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে প্রাথমিক শিক্ষা! ৬ ডিসেম্বর লালমনিরহাট মুক্ত দিবস বর্ষিয়ান সাংবাদিক মোফাখখারুল ইসলাম মজনু ছিলেন লালমনিরহাটের সাংবাদিকতার উজ্জ্বল নক্ষত্র জুজুর ভয় লালমনিরহাটে ইরি-বোরো ধানের আদর্শ বীজতলা তৈরীতে ব্যস্ত কৃষক! লালমনিরহাটে শীতকালীন শাক সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকেরা লালমনিরহাটে ট্রাফিক সচেতনতামূলক প্রচারণা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে তিন সাংবাদিককে হেনস্তা ও অশালীন আচরণ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন-বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত
একনা সরকারি ঘরের ব্যবস্থা করি দিলে আল্লাহ তোমাক ভাল করবে-রমিচা বেওয়া

একনা সরকারি ঘরের ব্যবস্থা করি দিলে আল্লাহ তোমাক ভাল করবে-রমিচা বেওয়া

আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: মোক দেখার কাও নাই, বাবা, মোক একটা কম্বল দিমেন। একনা ঘরের ব্যবস্থা করি দিলে আল্লাহ তোমাক ভাল করবে। মুই মইলে (মারা গেলে) লাশ দাফন করিবার মামুষও মোর নাই, কথাগুলো এক নিশ্বাসে শেষ করে চোখ মুচেন- রমিচা বেওয়া। তার এই আবেগ মাখা আর্ত্ননাদ হয়তো সমাজপতিদের মনকে নারা দিবে না, পৌচ্ছাবেনা সরকারি কোন কর্মকর্তার কান পর্যন্ত।

লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণণ গড্ডিমারী এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি ঘর, আর পলিথিনের ছাউনি দিয়ে বানানো ছোট একটি চালা ঘরে বাস করছেন রমিচা বেওয়া। বৃষ্টি এলে ঘরের এক কোণে গুটিসুটি মেরে নির্ঘুম রাত কাটে তার। দুর্দশাগ্রস্ত আর ভাগ্য বিড়ম্বিত নারী রমিচা বেওয়া (৫৫) । অনেকেই সরকারি-বেসরকারি সাহায্য পেলেও এ পর্যন্ত কিছুই জোটেনি তার ভাগ্যে।

 

নিত্য অভাব আর অসুস্থ্যতাকে সাথে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে তার দিন কাটছে। রাতেও ঘুমাতে পারেন না নিশ্চিন্তে। বৃষ্টি এলে ঘরের এক কোণে গুটিসুটি মেরে নির্ঘুম রাত কাটে তার। নিজের জমি না থাকায় প্রায় ৭/৮বছর ধরে বাহানত উল্ল্যাহ মেম্বারের দেয়া সামান্য জমিতে পলিথিন টিন দিয়ে চালা করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন সে। স্বামী-সন্তান হীন রমিচার চেহারায় বয়সের ছাপ স্পষ্ট হলেও এখন পর্যন্ত ভাগ্যে জোটেনি ভাতা, ভিজিডি কার্ড বা সরকারি উল্লেখ্য যোগ্য কোন সাহায্য, কিংবা মাথা গোঁজার মতো একটা সরকারি ঘর। দিনমুজুরী  ও মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে চলে এই অভাগীর সংসার। প্রচণ্ড শীতে ছিড়াফাটা কাপড় গায়ে জড়িয়ে শীত নিবারনের ব্যর্থ চেষ্টা করেন। তবুও আজ পর্যন্ত তার ভাগ্যে একটি কম্বলও জোটেনি।

 

ভূমিহীন এই নারীর থাকার একটি ঘর গত ৬/৭ মাস আগে ঝড় ও প্রচুর বৃষ্টিতে ভেঙ্গে পড়ে। সেই থেকে এই ভাঙ্গা টিনের চালা ঘরে  এই ঠান্ডায় বসবাস করছের কোন ভাবে। বিভিন্ন সময় স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যান ও হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসে গিয়ে টিনের জন্য আবেদন দিয়েও আজ পর্যন্ত টিন পাননি সে। টাকা পয়সা না থাকায় ভাঙ্গা ঘরে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

রমিচা বেওয়া হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত্য আহের উদ্দিন এর বড় মেয়ে। স্বামীর বাড়ি সিংগীমারী ইউনিয়নের কানিপাড়ায় হলেও স্বামী- আবুল কাশেম এর মৃত্যুর তার জায়গা জমি না থাকায় বর্তমানে দক্ষিণ গড্ডিমারী এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা বাজারের ওদূরে পরিত্যাক্ত একটুকরো জমিতে চালাঘর করে বসবাস করছেন।

 

দেখা গেছে, কনকনে শীত আর ঠান্ডা বাতাসে ভাঙ্গা টিনের ঘরে প্লাস্টিক মুড়িয়ে কোন মতে  মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঘরের সব টিন জং ধরে ভেঙ্গে পড়েছে। ঘরে থাকার কোন পরিবেশ নেই। স্বামী মারা গেছে ১০বছর আগে। নিঃসন্তান হওয়ায় নেই খোজ নেয়ার কোন মানুষ। সরকারি ভাবে পায়নি কোন ভাতা। এ ভাবেই কষ্টে দিন কাটছে তার। প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি সরকারি বাড়ি পাওয়া দাবি তোলেন। যাতে করে জীবনের শেষ সময়ে একটু শান্তিতে মরতে পারেন।

 

রমিচা বেওয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে মানুষের জমিতে বসবাস করছি। আমার তিন কুলে কেউ নেই। আমার ঘর ভেঙ্গে পড়েছে ঘরটি তোলার কোন উপায় নেই। আমি সরকারে কাছে একটি ঘর চাই। ইউএনও কাছে টিনের জন্য দরখাস্ত দিয়েছি অনেক বার জানিনা ইউএনও আমার সেই আবেদন দেখেছেন কি না। কেউ যদি আমার ঘরটি মেরামতের জন্য টিন দিয়ে সাহায্য করতেন তাহলে প্রাণ ভরে দোয়া দিতাম।

 

ওই গ্রামের প্রতিবেশী কাট ব্যবসায়ী মোস্তফা সাংবাদিকদের জানান,  রমিচা নিঃসন্তান তার থাকার ঘরটি ভেঙ্গে পড়েছে। টাকা পয়সা না থাকায় ভাঙ্গা ঘরটিতে রাত্রিযাপন করছেন। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে তার জন্য একটি সরকারি ঘর পাওয়া উচিৎ বলে মনে করি।

 

সিংগীমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু সাংবাদিকদের বলেন, তার বিষয়ে আমার জানা নেই তবে সরকারি ঘরের জন্য আবেদন দিলে বিষয়টি দেখা যাবে।

 

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামিউল আমিন সাংবাদিকদের জানান, খোঁজখবর নিয়ে তাকে সহযোগীতা করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone