শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
তিস্তা ব্যারাজ থেকে দেখা গেছে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা দেশীয় মাছের আকাল; প্রজনন হ্রাসে উদ্বেগ প্রথম স্ত্রী ও সন্তান থাকার পরেও অবিবাহিত পরিচয়ে বিয়ে করেছে স্বামী; স্ত্রীর মামলা ১৫ বিজিবি’র বিশেষ অভিযানে ভারতীয় কম্বল এবং ফেন্সিডিল ও গাঁজা জব্দ চিকিৎসার জন্য অসুস্থ বিডিআর সদস্যকে এককালীন আর্থিক সহায়তার অর্থ প্রদান অনুষ্ঠিত সকাল পোল্ট্রি ফার্ম পরিদর্শন করলেন জেলা প্রশাসক ১৫ বিজিবি’র বিশেষ অভিযানে ভারতীয় ফেন্সিডিল ও গাঁজা জব্দ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ বাহির করা সেই উপ-পরিচালক এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কমিউনিটি অ্যাকশন সভা অনুষ্ঠিত ১৫ বিজিবি’র বিশেষ অভিযানে ভারতীয় ইস্কাফ সিরাপ ও গাঁজা জব্দ

দেশীয় মাছের আকাল; প্রজনন হ্রাসে উদ্বেগ

লালমনিরহাটের নদী-নালা, খালে-বিলে ও জলাশয়ে দেশীয় মাছের প্রজনন হ্রাস পেতে শুরু করেছে, যা লালমনিরহাট জেলার খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ জীবিকার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। “মাছে-ভাতে বাঙ্গালি” প্রবাদে বাঙ্গালির খাদ্যাভ্যাসে মাছের গুরুত্ব অমোঘ। তবে লালমনিরহাট জেলার নদ-নদী, খালে-বিলে ও জলাশয়ে এখন দেশীয় মাছের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

 

লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার তিস্তা, ধরলা, রত্নাই, স্বর্ণামতী, সানিয়াজানসহ বহু নদী প্রবাহিত। চেনাকাটা, টেংরামারী ও অন্যান্য খালে-বিলেও এ অঞ্চলের প্রাণস্রোত। এ জলাশয়গুলোতে মাগুর, শিং, বাইন, বৈরালী, বুড়াল, বালিয়া, গজার, খলিসা, পুঁটি, কৈ, শোল, বোয়াল, সরপুঁটি, শাল, ওপর চকুয়া, চোপড়া, চান্দা, খরকাটি, চেং, টাকি, মলা, ঢেলা, চিংড়ি, টেংরা, গতা, পোয়া, কানি পাবদা, বাঘা আইড়, খৈলসা, গাং মাগুর, গুঁজি আইড়, পাবদা, রুই, কাতল, মৃগেল, চিতল, বাতাসি, বউরাণী, তারাবাইন ও কালোবাউশসহ নানা দেশীয় মাছের প্রজনন হ্রাস পাচ্ছে।

 

লালমনিরহাট জেলার হাট-বাজারে এখন বড় মাছ সহজে পাওয়া গেলেও ছোট দেশীয় মাছ খুবই দুর্লভ।

 

মাছ ব্যবসায়ী লিটন মিয়া, আব্দুস সালাম, আতাউর ইসলাম অভিযোগ করেছেন, ছোট মাছ এখন বাজারে খুব কম, যে পরিমাণ আসে তার দামও বেড়ে গেছে। পূর্বে জলাশয় ইজারা নিয়ে দেশীয় মাছ চাষ করা হতো, কিন্তু এখন ধনী ব্যবসায়ীরা হাইব্রিড মাছ চাষে ঝুঁকছেন, যা প্রজনন বাধাগ্রস্ত করছে।

 

লালমনিরহাটের বড়বাড়ী বাজারের আড়ত মালিক পলাশ রায় বলেন, এতো নদী-নালা থাকা সত্ত্বেও ছোট মাছ দুর্লভ। চাহিদা আছে প্রচুর, কিন্তু সরবরাহ নেই।

 

মাছ ক্রেতা জাহিদ হাসান বলেন, বাচ্চারা ছোট মাছ খেতে চায়, কিন্তু পুঁটি ও টাকি ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। এটি হতাশাজনক।

 

লালমনিরহাট জেলার জেলে আফজাল আলী, নজরুল ইসলাম বলেন, এক যুগ আগে নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ সহজলভ্য ছিলো। এখন জাল ফেললেও আগের মতো মাছ মেলে না। জীবিকা চালানোর জন্য পেশা পরিবর্তনের কথা ভাবছি।

 

বিশিষ্ট সাংবাদিক বিপুল ইসলাম বলেন, আমি জেলার হাট-বাজারে ছোট মাছের খোঁজে ঘুরেছি। কোথাও উল্লেখযোগ্য দেশীয় মাছ পাওয়া যায়নি। যদি এই অবস্থা চলতে থাকে, একদিন দেশীয় মাছ বিলীন হয়ে যাবে। সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

লালমনিরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সারোয়ার জামান বলেন, দেশীয় মাছ রক্ষায় হাট-বাজারে অভিযান চালিয়ে চায়না-দুয়ারী ও কারেন্ট জাল ধ্বংস করা হচ্ছে। জলাশয়ে ডিমওয়ালা মাছ অবমুক্ত, জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ প্রশিক্ষণ ও বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হলে দেশীয় মাছ রক্ষা সম্ভব।

 

স্থানীয়রা সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন, যাতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ সংরক্ষণ করা যায়।

 

লালমনিরহাট জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পুকুর রয়েছে ২০হাজার ৭শত ৯২টি আয়তন ২ হাজার ৩শত ৫৮.৩হেক্টর। নদী রয়েছে ৮টি আয়তন ১ হাজার ৬শত ৯৬হেক্টর। বিলের সংখ্যা ৫৫টি আয়তন ১হাজার ৬শত ১৩ হেক্টর। প্লাবনভূমির সংখ্যা ৯৮টি আয়তন ৩হাজার ৯শত ৭১ হেক্টর। খালের সংখ্যা ২৬টি আয়তন ২শত ৮৬ হেক্টর। ধানক্ষেতে মাছ চাষ সংখ্যা ৩হাজার ৬শত ১০টি আয়তন ৭শত ৩০হেক্টর। অন্যান্য ৪শত ২৪টি আয়তন ৩শত ৯ হেক্টর। নার্সারীর সংখ্যা ৬শত ৪৮টি আয়তন ২শত ৩৫.৮২ হেক্টর। সরকারী মৎস্য হ্যাচারীর সংখ্যা ১টি। বেসরকারী মৎস্য হ্যাচারীর সংখ্যা ৬টি। মানুষের সৃষ্ট পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রকৃতিতে তার প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ায় জলাশয়ে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone