আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার সাপটানা আবাসন আশ্রয়ন (প্রকল্প-১) পুকুর পুনঃখননের নামে অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে তোলা হচ্ছে ভূ-গর্ভস্থ্য বালু। এতে করে কর্মসংস্থান বঞ্চিত হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কর্মজীবি শ্রমিকরা। ভেঙ্গে পড়ছে পুকুরের পাড়। সরকারি এই আশ্রয়নের ঘর-বাড়িগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে।
জানা যায়, মৎস্য অধিদপ্তর রংপুর বিভাগ মৎস্য উন্নয়ন (প্রকল্প-২) এর আওতায় জেলা লালমনিরহাট সদরের সাপটানা আবাসন প্রকল্পের পুকুরটি পূনঃখননে ২০লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। ১.৫হেক্টর পুকুর বর্গায়তনের পুকুরের ১.২মিটার গভীর করে খনন কাজ করতে হবে। এতে করে পুকুরের পানি সেচে ফেলে শ্রমিক দিয়ে কাজ করার কথা ছিল। এতে একদিকে পুকুরের আয়তনস্থল সমান ভাবে খনন হবে। এছাড়াও আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসরত দিনমজুর শ্রমিকগণ দীর্ঘ মেয়াদে মাটি কাটার কাজ পাবে। পুকুরটিও মাছ চাষের উপযোগী হয়ে খনন করা হবে।
আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি অর্থায়নে পুনঃখননের কাজ অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে করা হচ্ছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের দলনেতা রাশেদ ইসলাম ও উপ-দলনেতা জাহিদুল ইসলামসহ স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র পুকুরের খননের নামে ভূ-গর্ভস্থ্য বালু তুলছে। এই বালু তারা প্রতি ট্রাকক্টোর (১৮০সিএফটি বালু) ৫শত টাকা দরে বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। যাহা সরকারি আইনে অবৈধ। পরিবেশ রক্ষায় সরকার ভূ-গর্ভস্থ বালু তোলা অবৈধ ঘোষণা করেছে।
আবাসন আশ্রয়ন প্রকল্পের বসবাসরতরা জানান, এভাবে পুকুর খনন করায় পুকুরের গভীরতা নষ্ট হয়ে যায়। পুকুরে তখন মাছ চাষ করা যায় না। তাছাড়াও পুকুরের পাড় ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে। এতে করে আবাসন প্রকল্পটির ঘর-বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে।
আশ্রয়ন কেন্দ্রের দলনেতা রাশেদ জানান, সরকারের কাছে অনুদান নিয়ে এই পুকুর খনন করছি। বিষয়টি উপজেলা নিবার্হী অফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা জানেন। সরকারি নিয়ম মেনে করা হচ্ছে না। বললে কোন উত্তর দিতে পারেনি।
লালমনিরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল জানান, সরকারি অর্থায়নে এ জেলায় ১২টি জলাশয়সহ পুকুর পূনঃখনন কার্যক্রম শেষের পথে। পুকুর খননে কোন ব্যক্তিই অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে খনন করতে পারবে না। অবৈধ বোমা মেশিন ব্যবহার নিষিদ্ধ। বালু উত্তোলন করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার রায় জানান, এই বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আশ্রয় প্রকল্পের বসবাসরতরা দাবি তুলেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে যারা দায়িত্বে রয়েছেন। তারা সঠিক ভাবে তদারকি করছে না। তারা জনগণ ও দেশের স্বার্থরক্ষায় কাজ করছে না। তারা অবৈধ সুযোগ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ দেখেছে। ইউএনও’র এখানে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দেখার ক্ষমতা আছে। তাঁকে অভিযোগ দিতে হবে কেন।