আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার কুমড়ীরহাট এসসি স্কুল এন্ড কলেজের রাস্তার পাশের খেলার মাঠ অবৈধভাবে দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করার ঘটনায় কথিত সাংবাদিক গোলাপ (৪০) ও স্থানীয় দূর্বৃত্ত আইয়ুব জাহিদ কমল (৪১)কে গ্রেফতার করায় এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে। গতকাল রবিবার ১৪ জুন রাত সাড়ে ৮টায় আদিতমারী থানা পুলিশ এই ২জনকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গোপন আস্তানা হতে আটক করে। এ সময় তারা ইয়াবা সেবন করে ছিল। তাদের কাছ থেকে ৪পিচ ইয়াবা ও ইয়াবা সেবনের উপকরণ জব্ধ করা হয়েছে। আজ সোমবার ১৫ জুন তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আটক কথিত সাংবাদিক গোলাপ মিয়া আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের বড় কমলাবাড়ী গ্রামের ফজলুল করিমের পুত্র। সে কথিত অনলাইন ও আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করে আসছিল। এই সুচতুর কথিত সাংবাদিক বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। এখন রাতারাতি ভোল্টপাল্টিয়ে জাপা (এ) রাজনীতির সাথে জড়িত। আটক কমল একই গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহানের পুত্র। সে স্থানীয় একটি দূর্বৃত্ত গ্রুপের দলনেতা। অবৈধ দখলদার, চাঁদাবাজীসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। এরা কমলাবাড়ী গ্রামের নিরীহ মানুষের কাছে আতঙ্কের নামে পরিণিত হয়ে ছিল।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারনে দীর্ঘ প্রায় ৩মাস ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ দান বন্ধ রয়েছে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকের আগমণ বন্ধ রয়েছে। সামাজিক দূরত্ব ও করোনা সংক্রামণ রোধে খেলার মাঠে এলাকার শিশু, কিশোর ও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে। এই সুযোগে স্থানীয় একটি চিহিৃত অবৈধ দখলদার ও দূর্বৃত্ত চক্র গত ৬ জুন কুমড়ীরহাট এসসি স্কুল এন্ড কলেজের খেলার মাঠের দক্ষিণ দিকের সড়ক সংলগ্ন ৩০/৩৫ বছরের পুরাতন ফলজ ও বনজ ১০টি গাছ কেটে নিয়ে যায়। কুমড়ীরহাট বাজার সংলগ্ন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির গাছ কেটে ফাঁকা স্থান টিন দিয়ে ঘিরে গত ১১ জুন পর্যন্ত পাঁকা দোকান ঘর নির্মাণ করে। অথচ শান্তি শৃংখলা রক্ষায় অবৈধ দখলদারদের পুলিশ নোটিশ দিয়ে এসে ছিল।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠের পাশে থাকা গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া ও মাঠ অবৈধ দখল করে পাঁকা দোকান ঘর নির্মাণ করার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিজ উদ্দিন বাদি হয়ে মকবুল হোসেন (৫৫), কথিত সাংবাদিক গোলাপ মিয়া (৪০) ও আব্দুল লতিফ (৪১)সহ ৯জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত নামা অর্ধশতাধিক ব্যক্তির নামে মামলা দায়ের করে। মামলা দায়ের হওয়ার পরে ১২ জুন নির্মান কাজ বন্ধ করে দখলদারেরা। লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা কঠোর হস্তে বিষয়টি পুলিশকে দেখার নির্দেশ দেয়। সেই সাথে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থরক্ষায় পদক্ষেপ নিতে বলেন। পুলিশের দৃঢ় অবস্থানের কারণে ঘটনা বেগতিক দেখে পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে দূর্বৃত্তরা আত্মগোপনে চলে যায়। আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির খেলার মাঠ অবৈধ দখলের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলেছে। তাদের গ্রেফতারের সময় তারা আইয়ুব জাহিদ কমলের গোপন আস্থানায় গোডাউনে ইয়াবা সেবন করছিল। তাদের বিরুদ্ধে পূর্বে একাধিক মামলা আছে। এছাড়াও নতুন করে মাদক আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুনছুর জানান, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বার্থ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। অবৈধ দখলদারদের কারণে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ও খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট হবে তাহা কোন ক্রমে হতে দেয়া যায়না। তবে বিষয়টি অনেক চ্যালেঞ্জিং।