শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটের ভুট্টার রঙ্গিন ফুলের মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে গ্রামীণ রাস্তার পথচারীদের লালমনিরহাটে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে অপহরণকৃত শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার ও হত্যার রহস্য উদঘাটন লালমনিরহাটে মাহে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল; ক্রেতারা স্বস্তিতে লালমনিরহাটের বিএনপি নেতার অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিল প্রশাসন লালমনিরহাটে শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে বসতবাড়িতে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধকরণের জন্য নারী কৃষকদের মাঝে বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে তৃতীয় শ্রেণির মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে চাঁদার দাবি না পেয়ে হত্যা তিস্তা ভবন রংপুরে স্পার বাঁধের ভাঙন রোধের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে বাংলাদেশ স্কাউটসের ত্রৈ-বার্ষিক কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত

টিটিসি বিভিন্ন অনিয়মে মুখ থুবরে পড়েছে!

আলোর মনি রিপোর্ট: নানা অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনায় মুখ থুবড়ে পড়েছে লালমনিরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত অনেক শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনেকে এ জন্য দায়ী করছেন অধ্যক্ষ দেলোয়ার উদ্দিন আহমেদকে। তারা অভিযোগ করেছেন, যোগদানের পর থেকেই তিনি দূর্নীতি আর অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন টিসিসিকে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহা-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

 

জানা যায়, প্রকৌশলী দেলোয়ার উদ্দিন আহমেদ লালমনিরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পরে গত ২০২০ সালের আগষ্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে অনুপস্থিত ছিলেন। এরপরেও তিনি নিয়মিত অফিসে আসেন না। তার মন মতো তিনি দুপুরে অফিসে আসেন এবং অনেক রাত পর্যন্ত অফিসে থাকেন। রাতের বেলাও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিসে থাকতে বাধ্য করেন এই অধ্যক্ষ। ইসলামী ধর্মালম্বী কর্মকর্তা-কর্মচারী নামাজে গেলেও তার অনুমতি নিয়ে যেতে হয়। কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী তার অনুমতি ছাড়া নামাজে গেলে তাদের সাথে অস্বাভাবিক দূর্ব্যবহার করেন এই অধ্যক্ষ। এদিকে করিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকুরী রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হয় ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বাজেট ঘাটতি থাকায় তারা কেউই সে সময় বর্ধিত বেতন ভাতা গ্রহণ করতে পারেননি। তাই পরবর্তীতে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৮ মাসের বকেয়া বিল জমা দিলে অধ্যক্ষ একাউন্স অফিস হতে চেক সংগ্রহ করে বকেয়া বিলের বিপরীতে ৫% ঘুষ দাবি করেন। অধ্যক্ষকে ঘুষ দিতে বাধ্য হয় ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অধ্যক্ষ দেলোয়ার উদ্দিন আহমেদ  ৫% হারে ৩লক্ষ ৩৮হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন এবং সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখ না খুলতে হুমকি দেন।

 

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানের সাইকেল গ্যারেজের দ্বায়িত্বরত ব্যক্তিকে কোনো কারন ছাড়াই চাকুরিচ্যুত্য করেন অধ্যক্ষ। তারপর ওই প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মচারীকে সাইকেল গ্যারেজে বসিয়ে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের নিকট হতে সাইকেল গ্যারেজ ফি গ্রহণ করে তা রাজস্ব খাতে জমা না দিয়ে আত্মসাত করেন অধ্যক্ষ।

 

অধ্যক্ষ দেলোয়ার উদ্দিন আহমেদের দাপটে টটস্ত ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কেউ তার সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষন করলেই তাকে শোকজ করা হয় এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঠুনকো কারন দেখিয়ে বেতন কর্তন করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সেইফ প্রকল্পের চলমান ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থীদের প্রাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য ট্রেড কর্তৃক কাচামালের চাহিদা দিলে অধ্যক্ষ ২৪ জানুয়ারি ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি ক্রয় কমিটি গঠন করেন। উক্ত ক্রয় কমিটিকেও তিনি তার জন্য ৫% টাকা রেখে ক্রয় কার্য সম্পন্ন করতে বলেন। ক্রয় কমিটি ৪লক্ষ ২৬হাজার টাকার ৫% অধ্যক্ষর জন্য রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আরএফকিউ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সকলের স্বাক্ষর সমন্বিত ফাইল অধ্যক্ষর নিকট জমা দেন। ফাইলটি যাচাইয়ের জন্য অধ্যক্ষ সময় নেন এবং তা দীর্ঘদিন যাবৎ যাচাই করতে থাকেন। এরপরে অধ্যক্ষ ক্রয় কমিটিকে ডেকে তার মনোনীত ব্যক্তিকে কাজ দিতে বলেন। ক্রয় কমিটি পুনঃরায় আরএফকিউ প্রক্রিয়ার জন্য অস্বীকৃতি জানালে তিনি সেটি বাতিল করে নিজের মতো করে তৈরি করে কমিটিকে স্বাক্ষর করতে বলেন। অধ্যক্ষর কথামত কমিটি স্বাক্ষর না করায় রেগে গিয়ে ওয়েল্ডিং ট্রেডের ইনচার্জকে নিজের মনগড়া অভিযোগ দিয়ে শোকজ করেন।

 

জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে দেলোয়ার উদ্দিন আহমেদ যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারনে অকারনে শোকজ ও বেতন কর্তন করেন। এ রকম অনিয়ম দীর্ঘদিন থেকে চলতে থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাধ্য হয়েই কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ দেন। অধ্যক্ষ  দেলোয়ার উদ্দিন আহমেদ তার পূর্বের কর্মস্থল জয়পুরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রতেও নানা রকম অনিয়ম ও দূর্নীতি করে এসেছিলেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা তার দূর্নীতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করার পরেই তার বদলি হয় লালমনিরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে।

 

এ বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রর শিক্ষক রায়হানুল কবীর সাংবাদিকদের বলেন, অধ্যক্ষ দোলোয়ার উদ্দিন আহমেদ টিটিসিতে যোগদানের পর থেকেই অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন । তার বিষয়ে মুখ খুলতে গেলে চাকুরির ক্ষতি করার ভয় দেখান তিনি।

 

এ বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র টিটিসিতে অধ্যক্ষ দেলোয়ার উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য নিতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করিয়েও কোনো বক্তব্য দেননি।

 

জেলা প্রশাসক আবু জাফর সাংবাদিকদের বলেন, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক বরাবরে দিয়েছে। যার একটি কপি আমাদের সরবরাহ করা হয়েছে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone