শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে তিস্তা নদী এখন আবাদি জমিতে পরিণত লালমনিরহাট মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র‍্যালি, আলোচনা সভা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে ৬২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (ভারপ্রাপ্ত বা চলতি দ্বায়িত্ব)র প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে প্রাথমিক শিক্ষা! ৬ ডিসেম্বর লালমনিরহাট মুক্ত দিবস বর্ষিয়ান সাংবাদিক মোফাখখারুল ইসলাম মজনু ছিলেন লালমনিরহাটের সাংবাদিকতার উজ্জ্বল নক্ষত্র জুজুর ভয় লালমনিরহাটে ইরি-বোরো ধানের আদর্শ বীজতলা তৈরীতে ব্যস্ত কৃষক! লালমনিরহাটে শীতকালীন শাক সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকেরা লালমনিরহাটে ট্রাফিক সচেতনতামূলক প্রচারণা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে তিন সাংবাদিককে হেনস্তা ও অশালীন আচরণ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন-বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত
পারিবারিক মাফিয়াকরণে চলছে লালমনিরহাট আদর্শ ডিগ্রী কলেজ

পারিবারিক মাফিয়াকরণে চলছে লালমনিরহাট আদর্শ ডিগ্রী কলেজ

:: হেলাল হোসেন কবির :: লালমনিরহাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজে দূর্নীতি-দুঃশাসন স্বজনপ্রীতি, পরিবারতন্ত্রের কারণে সেখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে। সেই সাথে শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে চাপাক্ষোভ আর কমিটি নিয়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

 

অনুসন্ধান করে জানা যায়, লালমনিরহাট পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডে অবস্থিত লালমনিরহাট আদর্শ ডিগ্রী কলেজের মাত্র ছয়দিনের ব্যবধানে এডহক কমিটি পরির্বতন করার বিষয়ে এলাকা জুড়ে বেশ চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে।

 

সূত্রে জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই কলেজে চলতি বছরে ১১ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট সরকারি কলেজের (অবঃ) অধ্যক্ষ মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিককে সভাপতি মনোনীত করেন। এরপর অসৎ উপায়ে ১৭ সেপ্টেম্বর আদর্শ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এ.কে.এম মাহবুবুল আলম নিজেকে সভাপতির চিঠি বাগিয়ে নেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেখানে তার স্ত্রীকে বিদ্যোৎসাহী সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।

 

জানা যায়, মাহবুবুল আলম মিঠু তাঁর স্ত্রী মর্জিনা সুলতানাকে কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অত্র কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদস্য করে রেখে তার দূর্নীতি-অপকর্মের ঢেকে রেখেছেন এবং তার বড় ভাই সাবেক মেয়র মোশারফ হোসেন রানাকে দাতা সদস্য বানিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে কলেজটিকে পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে আবদ্ধ করে রেখেছেন। এ বিষয়ে দুদকসহ একাধিক সংস্থা তদন্ত করছেন।

 

লালমনিরহাট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নূরে তাসনিম ২৫ সেপ্টেম্বর এডহক কমিটির বিষয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কাছে লেখেন গত ১১ সেপ্টেম্বর INS02-5/00100 /2016/2912/২৭৩০ নং স্মারকে জনাব মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক কে সভাপতি করে ০৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা ২৯ আগস্টের প্রজ্ঞাপনের সাথে সাংঘর্ষিক। এ ছাড়াও ১৭ সেপ্টেম্বর INSO25/00100/2016/2912/২৯১৮ নং স্মারক মূলে জনাব মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক এর মনোনয়ন পরিবর্তন পূর্বক তদস্থলে সভাপতি হিসাবে জনাব এ কে এম মাহবুবুল আলম কে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু ২৯ সেপ্টেম্বর ০৭ (১৫৩৭)/জাতীয়বি/কঃপঃ/২৬৪৬ নং সংশোধিত প্রজ্ঞাপন মোতাবেক এডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য মনোনয়নের নিমিত্ত ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রীধারী তিনজন করে শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করার নির্দেশনা থাকলেও উক্ত কলেজ হতে এ বিষয়ক তালিকা প্রেরিত হওয়ার বিষয়ে এ কার্যালয়কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অবহিত করেননি।

 

এবিষয়ে আদর্শ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ ঈসা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ কে এম মাহবুবুল আলম মিঠু স্যার এডহক কমিটির সভাপতি হয়ে এসে তিনি তার মতো করে কার্যক্রম চলমান রেখেছেন। তিনিই আমাদের সভাপতি।

 

কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, প্রতিষ্ঠানটি মাহবুবুল আলম মিঠু’র পরিবারের মাফিয়াকরণের কাছে জিম্মি হয়ে গেছে, তার চাকুরীর মেয়াদ ৬০ বছর হয়ে গত সালের ২৬ জানুয়ারিতে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তিনি চাকুরীর মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করে নিয়ে এসে আবার জোরপূর্বক অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন, সে কারণে সে সময় আমরা ২২/২৩ জন শিক্ষক একত্রিত হয়ে তার “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বকে” চ্যালেঞ্জ করে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন এবং মহামান্য হাইকোর্ট তার দায়িত্ব অবৈধ ঘোষণা করে আদেশ প্রদান করেন।

 

তার সময় চাকরি না পাওয়া শামীম বলেন, এক বছর জোরপূর্বক অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করার সময় তিনি মূলতঃ কিছু নিয়োগ বাণিজ্য করেন, মাহবুবুল আলম জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত, তাই সে সময় জাতীয় পার্টির নেতা এ্যাড. নজরুল ইসলামকে নামে মাত্র সভাপতি বানিয়ে শেষ একটি বছর চরম দুর্নীতির সাথে জড়িত হন, আমি কলেজে কয়েক বছর ধরে বিনা টাকায় চাকরি করেছি টাকা দিতে পারিনি বলে আমাকে নিয়োগের সময় বাদ দেওয়া হয়েছে।

 

সহকারী অধ্যাপক রবিউল ইসলাম বলেন, লালমনিরহাট আদর্শ ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এ কে এম মাহবুবুল আলম ২০২৩ সালেরঅবসর গ্রহণ করার পরও বিধি বহির্ভূতভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে থেকে ২০ মে নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মোঃ ঈশা সাহেবকে উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন এবং ৩০ মে মোঃ ঈশা সাহেব যোগদান করেন। এমতাবস্থায় সাধারণ শিক্ষকগণ মহামান্য হাইকোর্টে জনাব মাহবুবুল আলম এর বিরুদ্ধে রিট পিটিশন দায়ের করেন। উক্ত রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট চাকরী মেয়াদ বৃদ্ধি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপর মাহবুবুল আলম মোঃ ঈশা সাহেবকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে চলমান কমিটিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে নাম অন্তর্ভুক্ত করে অদ্যাবধি কলেজটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন।

 

এ বিষয়ে একেএম মাহবুবুল আলম মিঠুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিন মাস আগে যখন এ্যাড. নজরুল কলেজের সভাপতি ছিলেন তখন ভাইস প্রিন্সিপাল মিলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার নাম প্রস্তাব পাঠিয়েছিলো, তারপর চিঠি যায় আবু বক্কর স্যারের এরপর মজিদার সাবেক অধ্যক্ষ প্রদীপ এর নাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভূল করে ২ নম্বর চিঠি স্বাক্ষর করেছে, পরবর্তীতে ওরা যখন বুঝেছে তখন সঙ্গে সঙ্গে চেঞ্জ করে আমার চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone