:: হেলাল হোসেন কবির :: রাজশাহী ভেরামারা থেকে সংসদ সদস্য হয়ে শাহরিয়ার আলম আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই মেয়াদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
শাহরিয়ার আলমের রাজশাহীর চারঘাটে রয়েছে বিপুল পরিমাণ জমি, ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে ২৫ বিঘার বাগানবাড়ি, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ১৩ বিঘা জমির সন্ধান পাওয়া গেছে।
লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ২০১৭ সালে ১৩ বিঘা জমি কিনেন। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে খামারবাড়ি। তার দীর্ঘদিনের এপিএস সিরাজের বাড়িও এই কালীগঞ্জ উপজেলায়। খামারের দেখভাল করেন এই এপিএসের লোকজন।
রাজশাহীর ভোটে প্রতিমন্ত্রী হয়ে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জের মৎস্য খামারির বিষয় শুনে রীতিমত অবাক বিষয়। তবে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ১৩ বিঘা জমির মধ্যে জবরদখল করে নেয়া ৫ বিঘা জমি ইতিমধ্যে বুঝে নিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কেনা জমির আড়ালে জমি জবরদখল করে বাগানবাড়ি করেছেন তিনি। অন্যের পৈতৃক সম্পদ ও সরকারি সম্পত্তিও বাদ যায়নি। প্রভাব খাটিয়ে ফার্মের নামে কয়েক কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
এসব খামার ছিল শাহরিয়ারের বহুমাত্রিক জালিয়াতির অংশ। একদিকে যেমন, এসব খামারে অতিরিক্ত মুনাফা দেখিয়ে তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বৈধ করতেন। কালো টাকা সাদা করার পাশাপাশি, এসব খামার দেখিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে স্বল্পসুদে ঋণ নিতেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি এবং মৎস্য খামারের জন্য স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ব্যবস্থা আছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শাহরিয়ার আলম ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নেন।
পাঁচ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর, জমির আসল মালিকরা তাদের জমির দখল নিয়ে নেয়। যারা এখনও নিতে পারেনি তারা দখল গ্রহণের চেষ্টা করছে। এতে অবশ্য শাহরিয়ার আলমের কিছুই যায় আসে না। কারণ ভুয়া খামার দেখিয়ে ব্যাংক লুটের টাকা বিদেশে পাচার করে সেখানে নির্বিঘ্নে আছেন এই দুর্নীতিবাজ।
পেশাগত জীবনে তার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কোনো পড়াশোনা নেই। এ বিষয়ে ছিল না তার কোনো ডিগ্রি বা পূর্ব অভিজ্ঞতা। তার পরও তিনি কীভাবে দেশের দ্বিতীয় প্রধান কূটনীতিক ছিলেন তা এক বিস্ময়।