শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত স্ত্রীসহ সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা লালমনিরহাটে ২৭ মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার ডেভিল হান্ট অভিযানে লালমনিরহাটে ছাত্রলীগের সভাপতি আটক লালমনিরহাটে পাথর ভর্তি ট্রাক থেকে গাঁজা উদ্ধার কালীগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযান, অস্ত্রসহ শীর্ষ সন্ত্রাসী আহসান গ্রেপ্তার লালমনিরহাটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর কর্মী ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ফ্রি ক্যাম্পেইন-২০২৫ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে নবীন বরণ ও বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ২০২৫ খ্রি. অনুষ্ঠিত
লালমনিরহাটের চার নদী শুকনো মৌসুমে আবাদি জমিতে রূপ নিচ্ছে

লালমনিরহাটের চার নদী শুকনো মৌসুমে আবাদি জমিতে রূপ নিচ্ছে

দেশের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাটের ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান ও রত্নাই নদী। বর্ষা মৌসুমের পর পরই এ নদীগুলোতে তেমন পানি প্রবাহ থাকে না। শুকিয়ে যাওয়া এসব নদীতে স্থানীয় কৃষকেরা চাষ করছেন ধান, ভূট্টাসহ বিভিন্ন জাতের ফসল। ফলে শুকনো নদীর বুক জুড়ে এখন চোখে পড়ে বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, এ চার নদীর বুকে চলতি বছর প্রায় শতকোটি টাকার ফসল উৎপাদন হবে।

 

এ বছর লালমনিরহাটের তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান ও রত্নাই নদীর বুকে বোরো ধান, ভূট্টা, মিষ্টি কুমড়া, আলু, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করা হয়েছে। মূলত নদীর তীরবর্তী ও চরে বসবাসকারী কৃষকেরাই এর উদ্যোক্তা। তাদের একক উদ্যোগেই উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় শতকোটি টাকার এ বিপুল পরিমাণ ফসল।

 

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমার ঢাকাইয়াপাড়া ও সাঁওতালপাড়া হয়ে প্রমত্তা তিস্তা নদী লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের আঙ্গরপোতা দিয়ে প্রবেশ করেছে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রবেশ পথ লালমনিরহাটের দহগ্রাম থেকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার শেষ প্রান্তে গোকুন্ডা ইউনিয়ন পর্যন্ত নদীর বুক জুড়ে ভূট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক চাষ হয়েছে। ভারতের একই জেলার চ্যাংড়াবান্ধা হয়ে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী দিয়ে প্রবেশ করেছে ধরলা নদী। প্রবেশপথ বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে লালমনিরহাটের বড়বাড়ী ইউনিয়ন পর্যন্ত এ নদীর বুক জুড়ে বোরো ধান ও ভূট্টা চাষ হয়েছে। ধান ও ভূট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা।

 

অন্যদিকে ভারতের মেখলিগঞ্জ মহকুমার কাংড়াতলীর মোড় হয়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ী ইউনিয়নের পানবাড়ী এলাকা দিয়ে প্রবেশ করেছে সানিয়াজান নদী। কুচলিবাড়ী প্রবেশপথ থেকে বাউরা জমগ্রাম এলাকা পর্যন্ত এ নদীর বুক জুড়ে বোরো ধান এবং ভূট্টা চাষ করেছেন নদী-তীরবর্তী কৃষকেরা। এছাড়া লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়ন হয়ে ভারত থেকে প্রবেশ করেছে রত্নাই নদী। এ নদী গোড়ল ইউনিয়ন হয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের চর কুলাঘাট হয়ে ধরলা নদীতে মিশেছে। এ নদীর বুক জুড়ে বোরো ধান ও ভূট্টা ব্যাপকভাবে আবাদ হয়েছে।

 

লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, লালমনিরহাট জেলায় ৭২টি চরাঞ্চল রয়েছে। এসব চরের মোট জমির পরিমাণ ২৬হাজার ৬শত ৭৬একর। এর মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ২০হাজার ৪শত ৮৬একর। এসব জমি চাষাবাদ করে থাকে ৩১হাজার ৬শত ৩৭টি কৃষি পরিবার। তবে স্থানীয়দের হিসাব বলছে, কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যের দ্বিগুণ জমি চাষ হয়। যার মধ্যে রয়েছে এ চার নদীর জমিও।

 

সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান ও রত্নাই নদীতে আনুমানিক ১০হাজার একরেরও বেশি জমিতে বোরো আবাদের বাম্পার ফলন হয়েছে। এসব জমিতে প্রতি একরে গড়ে দুই টন করে বোরো ধান উৎপাদনের আশা করছেন চাষীরা। এ হিসাবমতে, ১০হাজার একর জমিতে ২হাজার টন ধান উৎপাদন হওয়ার কথা। প্রতি মণ ধানের দাম গড়ে ৮০০ টাকা করে ধরলে ২হাজার টন ধানের দাম প্রায় ৪০ কোটি টাকা হয়। এছাড়া প্রায় ১৫হাজার একর জমিতে ভূট্টা চাষ হয়েছে। প্রতি একর জমিতে চার টন করে ভূট্টা উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। এ হিসাবে, ১৫ হাজার একর জমিতে ৬০হাজার টন ভূট্টা উৎপাদন হবে। প্রতি মণ ভুট্টার বর্তমান বাজারদর ৮০০টাকা অনুযায়ী মোট দাম প্রায় ১শত ২০কোটি টাকা হয়। এ চার নদীর বুকজুড়ে চাষ করা অন্যান্য ফসলের হিসাব বাদ দিলেও কেবল বোরো ধান ও ভূট্টা বিক্রি করেই প্রায় ১শত ৬০কোটি টাকা আয়ের প্রত্যাশা করছেন কৃষকেরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone