শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে উপজেলা চেয়ারম্যান ৭, ভাইস চেয়ারম্যান ১০, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৬জন বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থী; ১জন চেয়ারম্যানের মনোনয়নপত্র বাতিল! প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৪ শুভ উদ্বোধন এবং আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত মানবিক সহায়তা (ঢেউটিন ও টাকা) বিতরণ অনুষ্ঠিত এমদাদুল সিন্ডিকেটের এক সদস্য গ্রেফতার! সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সাবেক ইউপি সদস্য গুলিবিদ্ধ লালমনিরহাটের ২টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৮জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ লালমনিরহাটের শখের বাজার সড়কের পথচারীরা, কর্তৃপক্ষ নির্বিকার লালমনিরহাটে বিলুপ্তির পথে ঘুঘু পাখি! একুশ বছর
মাছ ও গরুর আড়ালে জমজমাট মাদক ব্যবসা : একাধিক মামলার আসামি তবুও ধরাছোঁয়ার বাইরে সুজিত ভদ্র

মাছ ও গরুর আড়ালে জমজমাট মাদক ব্যবসা : একাধিক মামলার আসামি তবুও ধরাছোঁয়ার বাইরে সুজিত ভদ্র

আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: সুজিত ভদ্র। পুরো নাম সুজিত কুমার ভদ্র। দেখলে মনে হয় কোন সাধু-সন্যাসী। নিজেকে উপস্থাপন করেন খুব সাদা মাটা মানুষ হিসেবে। কিন্তু এই সুজিত ভদ্র জড়িয়ে আছেন জমজমাট মাদক ব্যবসায়।

 

জানা যায়, লালমনিরহাট জেলা শহরের রামকৃষ্ণ মিশন রোডের বাসিন্দা কালিপদ ভদ্রের ছেলে সুজিত কুমার ভদ্র। সুজিত কুমার ভদ্রের রয়েছে জেলা শহরের গোশালা বাজারে মাছের ব্যবসা, লালমনিরহাট সদরের কুলাঘাট পশ্চিম বড়ুয়া এলাকায় গরুর খামার ও পরিবহন ব্যবসা। মূলত এই মাছের ব্যবসা, গরুর খামার ও পরিবহন ব্যবসা হলো তার লোক দেখানো। এই তিন ব্যবসাকে পুঁজি করে ব্যবসার আড়ালে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাজার বড় বড় চালান পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসা করেই চলছেন। করোনাকালেও থেমে নেই তার রমরমা মাদকের ব্যবসা। হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। মাছ ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলছে সুজিত ভদ্রকে নিয়ে ভিন্ন কথা। হঠাৎ তার আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠার রহস্য কি?

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে একটি মামলায় সুজিত ভদ্র ৭বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়ে ২০০৯ সাল পর্যন্ত লালমনিরহাট জেলা কারাগারে ছিলেন। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার কারণে পরিচয় হয় একাধিক মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তাদের পরামর্শে কারাগার থেকে বের হয়ে তিনি মাদকের বড় বড় চালান পাঠানো শুরু করেন জেলার বাইরে বেশ কিছু জায়গায়। তখন মাদক পরিবহনের জন্য নিরাপদ রুট হিসেবে তিনি ট্রেনকে বেছে নেন। সেই সাথে মাদকের ভারী হিসেবে এমন কিছু ব্যক্তিকে দিয়ে গাজার বড় বড় চালান পাঠান যাদের পুলিশ কখনো সন্দেহ করবেনা। তাদের ফলো করার জন্য সুজিত তার পরিক্ষিত কিছু বেকার যুবককে সম্পৃক্ত করেন। যাদের মূল কাজ যাত্রী সেজে সেই সব ভারীকে ফলো করা। কিন্তু যতই চালাকি করুক, পুলিশের চোখকে বেশিদিন ফাঁকি দিতে পারেননি। এরমধ্যে কয়েকটি মাদকের চালান ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। তবে সুজিত থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। এরপর পরিকল্পনা পরিবর্তন করে শুরু করেন মাছের আড়ত ও গরুর খামার। সেই আড়তে মাছ আনা নেয়ার কাজে ব্যবহার করেন পিকআপ ও ট্রাক। মূলত এসব পিকআপ ও ট্রাকের মধ্যেই কৌশলে গাজার বড় বড় চালান পাঠানো শুরু করেন। অপরদিকে গরুর খামার ব্যবহার হয় মাদক মজুত রাখার নিরাপদ স্থান হিসেবে। এভাবেই পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। পাল্টে যেতে শুরু করে তার বেশভূষা। এলাকাবাসী ও পরিচিতরা তার এই হঠাৎ উত্থানে কানাঘুষা শুরু করেন।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, এতো অল্প বয়সে হঠাৎ করে এতো টাকার মালিক মাদক ব্যবসা ছাড়া কোনোভাবে সম্ভব নয়। মাছ বিক্রি করে কয়জনে চলতে পারছে ভালো মতো। পুরাতন অনেক মাছ ব্যবসায়ীর এখনো ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু সুজিত ভদ্র এতো টাকার মালিক কিভাবে হয়। তার চলাফেরাও আলিশান।

 

২০১৭ সালে এরপর একে একে মাদক ব্যবসায়ীসহ বিপুল পরিমাণ মাদকের চালান ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। সে সময় সুজিতের মাদক ব্যবসায় নেমে আসে ধ্বস। তার নামে লালমনিরহাট সদর থানায় কমপক্ষে ৯টি ও কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানায় ১টি মাদক ও অস্ত্র মামলাও রয়েছে।

 

সুজিত ভদ্র ও তার সহযোগীদের মাদকের কিছু চিত্রঃ মাদক বিরোধী অভিযানের এক পর্যায়ে মাদক মামলার ওয়ারেন্টে সুজিত কুমার ভদ্রকে ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আটক করেন এসআই সেলিম রেজা ও এসআই তুলসী। সেই মামলায় জামিনে ছাড়া পেলেও পরবর্তীতে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তিস্তা সেতু টোল প্লাজায় ট্রাক আটক করে তল্লাশি চালিয়ে ওই ট্রাক থেকে গাজা উদ্ধার করেন এসআই সেলিম রেজা ও তিস্তা টোল প্লাজার চেক পোস্টের দায়িত্বে থাকা এএসআই আতাউল গনি প্রধান।

 

২০১৮ সা‌লে সু‌জি‌ত ভদ্রের ট্রাকসহ তার সহ‌যোগী নুরুল হক ঘ‌টি, দো‌য়েল, ড্রাইভার ফজলুসহ ১০কে‌জি গাজাসহ আটক ক‌রেন এএসআই খা‌দেমুল। যাহার মামলা নং-৫০, তাং ২৪-০৮-২০১৮ইং।

 

২০১৬ সা‌লে সু‌জি‌তের পিকআপসহ তাহার ড্রাইভারকে গাজাসহ আটক ক‌রেন এসআই মা‌নিক মিয়া।

 

৩০কেজি গাজাসহ সুজিতের খামার দেখাশুনা ক‌রে লা‌কি ওরফে মা‌মি আটক হন।

 

এ বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত সুজিত কুমার ভদ্র বলেন, আমার নামে কোন মাদকের মামলা নেই, পুলিশ তদন্ত করে আমাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।

 

লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজ আলম জানান, লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ বরাবরই মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে আসছে, আর এসআই সেলিম ছিল মাদক কারবারীদের মূর্তিমান আতংক। আর তাই তার বিরুদ্ধ মাদক ব্যবসায়ীরা একাট্টা হয়েছে। এটি পুলিশি পেশার জন্য অশনি সংকেত। সেলিমের বিরুদ্ধ যে সব অভিযোগ মাদক ব্যবসায়ীরা উঠিয়েছে তা ভিত্তিহীন।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone