লালমনিরহাটের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ। বাতাসে বোরো-আমন ধানের সবুজ ঢেউ লালমনিরহাট জেলার কৃষকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা। বোরো-আমন ধান নিয়ে কৃষকের স্বপ্ন। সবুজ ধানের ক্ষেত দেখে আনন্দে বুক ভরে উঠছে কৃষকের মন।
এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে বোরো-আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর লালমনিরহাট জেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় প্রায় ৮৬হাজার ৬শত ৫০হেক্টর জমিতে বোরো-আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত জাতের ধান চাষ হয়েছে।
কদিন পরেই ধানের সবুজ চারায় কাঁচা শিষ আসবে এবং কাঁচা শিষ হলুদ বর্ণ ধারণ করবে। এরপর সোনালী ধানের শিষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। মাঠ ভরা ফসলের স্বপ্ন দেখে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠবে আনন্দের ছোঁয়া। রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষক-কৃষাণীর শূন্য গোলা। বোরো-আমন মৌসুমকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখে এ অঞ্চলের চাষিরা।
ফলে ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর হয়েছে। ধানের সবল-সতেজ চারা এবং শিষ বের হবে। তাই এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি আমন মৌসুমে বোরো-আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ১নং মোগলহাট ইউনিয়নের কাকেয়াটেপা, ভাটিবাড়ী, কোদালখাতা ও ফুলগাছ এলাকায় বোরো-আমন ধানের মাঠে সবুজের সমারোহ। ধানের প্রতিটি খেতে শিষ উঁকি দিচ্ছে। খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকের। কৃষকেরা মাঠে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে সেচ, সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং পার্চিং ব্যবহার করছেন কেউ কেউ।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত বোরো-আমন ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি ধান কাটা শুরু হবে। তখন পূরণ হবে কৃষকের স্বপ্ন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কোদালখাতা, ফুলগাছ এলাকার মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাক, হযরত আলী, সাহেব আলী, কমল কান্তি বর্মনসহ বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, চলতি বছর ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকেরা। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে বিগত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবে সবাই।
ফুলগাছ ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব বলেন, বোরো-আমন ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। ফলনও বেশ ভালো হবে। তাই বোরো-আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন বলেন, আমাদের খরিপ টু মৌসুমে ৮৬হাজার ৬শত ৫০হেক্টর জমিতে রোপা-আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মোট ৮৫হাজার ৩শত ৫০হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষাবাদ চলমান রয়েছে।