লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)র সই জাল করে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে জামায়াতে ইসলামীর আমির ও মডেল কলেজের অধ্যক্ষ হাছেন আলীর বিরুদ্ধে। সই জালের ঘটনায় জামায়াত নেতা হাছেন আলীকে শোকজ করেছেন ইউএনও। শোকজের পর ওই জামায়াত আমিরকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সাবেক জামায়াতের আমির ও অধ্যক্ষ হাছেন আলীর অপসারণের দাবিতে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে মানববন্ধন করেন ওই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী।
মানববন্ধন শেষে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)র কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
হাছেন আলী লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির। এছাড়া তিনি চলতি বছরের ১৩ মে থেকে হাতীবান্ধা মডেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
মানববন্ধনে শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন, জামায়াত নেতা হাছেন আলী দলের প্রভাব খাটিয়ে নানা অপকর্ম করেছেন। তিনি পুরনো শিক্ষকদের বাদ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা করে ধরা পড়েছেন। তাছাড়া হাছেন আলী কলেজের কোনো বৈধ শিক্ষক নন। তিনি প্রক্সি শিক্ষক হিসেবে ছিলেন। আমরা তার বিচার ও অপসারণ চাই।
কলেজ সূত্র জানায়, হাতীবান্ধা মডেল কলেজ প্রায় ২বছর আগে এমপিওভুক্ত হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে চলতি বছরের ১৩ মে উপজেলা জামায়াতের আমির হাছেন আলীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও হাতীবান্ধার ইউএনও শামীম মিঞা। কিন্তু বেতন-ভাতা পেতে নতুন কয়েকজনের নিয়োগ দেখিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে ১৩টি ফাইল পাঠিয়ে সেগুলোর অনুমোদন বের করেন। এতে কলেজটির সভাপতি হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর স্ক্যান করে ব্যবহার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন ইউএনও। এরপর ওই দিন তাকে উপজেলা জামায়াতের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি রফিকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা বলেন, যেহেতু আমি স্বাক্ষর করিনি, সেহেতু আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করে ইনডেক্সের জন্য পাঠানো হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলীকে বৃহস্পতিবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। আমরা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে জামায়াতের সাবেক আমির ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলী বলেন, এ বিষয়ে ইউএনওর কাছে আমার বক্তব্য তুলে ধরেছি। এ ছাড়া আর কোনো মন্তব্য আমি করব না।