শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।

গাছে গাছে ব্যাপক কালো জাম ধরেছে

আলোর মনি রিপোর্ট: কালো জাম বাণিজ্যিক ভাবে চাষ বা বাগান করে না কেউ। তবুও ধীরে ধীরে বাড়ছে গ্রীষ্মকালীন আরেকটি ফল কালোজামের উৎপাদন।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরে অল্প অল্প করে বেড়েছে লোভনীয় এই কালো জামের উৎপাদন। এ সময় সামান্য করে হলেও কালো জামের চাষের জমি বেড়েছে।

 

জানা যায়, কালো জাম যেদিন পাকে সেদিনই খেয়ে ফেলতে হয়। পাকা অবস্থায় কালো জাম বেশি সময় রাখা যায় না। তাই কালো জাম রপ্তানিও করা হয় না।

 

আরও জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদরসহ আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম উপজেলা ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভায় প্রায় সর্বত্রই কালো জাম কমবেশি হয়ে থাকে।

 

কালচে বেগুনি রঙের কালো জাম ফলটি খেতেও যেমন সুস্বাদু, তেমনই পুষ্টিগুণে ভরা। ছোটদেরও এই ফল বেশি পছন্দের। যেকোনও বেরি জাতীয় ফলই খুব উপকারী। আর তার মধ্যে একটি হল কালো জাম বা ব্ল্যাকবেরি। এটি ত্বক ও চুলের সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ উপকারি।

কালো জামে প্রচুর পরিমানে বিভিন্ন উপকারী উপাদান যেমন- ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, সোডিয়াম, এছাড়াও ভিটামিন এ, সি, বি-৬সহ আরও অনেক উপকারী উপাদান থাকে। যা শরীরকে ভালো রাখার জন্য প্রতিদিন দরকার। শুধু ফলই নয়, এর পাতা ও বীজ বিভিন্ন চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হয়। কালো জাম বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত। এটি খাওয়াও সহজ খোসা ছাড়াবার দরকার পড়ে না। কালো জাম অনেকদিন ধরেই ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। কালো জামের মধ্যে আছে এমন কিছু উপাদান যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। বিশেষ করে এর বীজ রক্তের সুগার লেবেল কমাতে একটি প্রমাণিত সমাধান। কালো জামকে ডায়াবেটিস বিরোধী বলা হয়। কালো জাম হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভরা। অন্যান্য যেকোনো ফল বা সবজি যেগুলো সাধারণত রোজ খাওয়া হয় সেগুলো থেকে কালো জামে সবচেয়ে বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। রোজকার জীবনে এ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই প্রয়োজনীয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ভেতর থেকে ফিট রাখে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কালোজাম হজম করতে সাহায্য করে। হজমের কারণে হওয়া অ্যালসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও দাঁত ভালো রাখে। স্পাইরিয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। এছাড়াও ত্বককেও ভালো রাখতে এটি উপকারী। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে এটি ব্যবহার করা হয়।

 

কালো জাম ত্বকের যত্নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাম রক্ত পরিষ্কার করে। তার ফলে ত্বক ভালো থাকে। এবং ত্বকের নানান সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় এবং ওজন কমাতেও কালো জাম সাহায্য করে। এছাড়াও কালো জাম সর্দি কাশি কমাতে সাহায্য করে। যদি খুব সর্দিকাশিতে ভোগেন তাহলে রোজ কালোজাম খান। এতে থাকা ভিটামিন এ, সি, বি-৬ শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায়। কালো জামের বীজ বহুমুত্র রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়। নিয়মিত খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে সহজে। গরমকালে আম খাবার সঙ্গে সঙ্গে কালোজামকেও রোজ যোগ করে নিন খাবার তালিকায়।

 

বর্তমানে ক্যান্সারের ঝুঁকি ভীষণ ভাবে বেড়েছে। আর কালো জাম ক্যান্সার প্রতিরোধে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে কান্সারে আক্রান্ত হবার হাত থেকে রক্ষা করে। কালো জাম শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়তে দেয়না। এছাড়া এটি প্রস্টেট ক্যান্সার সারিয়ে তুলতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।

কালো জাম শরীরকে ভালো রাখার সঙ্গে সঙ্গে মনকে ভালো রাখতেও সাহায্য করে। এতে থাকা গ্লুকোজ কাজ করার শক্তি বাড়ায় ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। তার ফলে মস্তিষ্ক দ্রুত চলতে থাকে। স্ট্রেসকে কমাতে সাহায্য করে। কালো জাম হার্টকে ভালো রাখতেও সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন সি, বি-৬, ফাইবার, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমান কমায়। তার ফলে হার্ট সুস্থ থাকে ও হার্টের অসুখে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা থাকে না। এছাড়াও এটি শরীরে দুষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমান কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বিশেষ ভাবে সাহায্য করে থাকে।

 

ফুলগাছ গ্রামের মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পিছনে একটি কালো জাম গাছ রয়েছে। এবার প্রচুর পরিমাণে জাম গাছে ধরেছেন। আশা করা হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যেই জাম পাকতে শুরু করবে।

 

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুলতান সেলিম বলেন, একটা গাছ থেকে অন্তত ১শত কেজি কালো জাম ফল পাওয়া সম্ভব। তাই অনায়াসে মাটিতে বসে অথবা দাঁড়িয়ে অল্প অল্প করে জাম সংগ্রহ করে বাড়িতে খাওয়া সম্ভব, আবার বাজারে বিক্রয়ও সম্ভব।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone