সীমান্তে লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি)’র মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজাসহ ২জন আসামীকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি)’র এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি জানিয়েছেন।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চলমান চোরাচালান ও মাদক বিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন বিওপির টহলদল ৩টি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ১জন এবং গাঁজাসহ ১জন সর্বমোট ২জন আসামী আটক করেছে। চোরাচালান প্রতিরোধের মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা ও মাদক বিরোধী অভিযানে বিজিবি’র দৃঢ় অবস্থানের প্রমাণ মিলেছে।
বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রে বিজিবি জানতে পারে যে, চোরাকারবারীরা সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার করবে। উক্ত তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোর আনুমানিক ৩টায় কাশিপুর বিওপি’র আওতাধীন কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার আজওয়াটারী নামক স্থানে বিজিবি’র টহলদল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালনাকালীন সন্দেহজনক ব্যক্তিকে ভারতীয় সীমান্তের দিক হতে আসতে দেখে গতিবিধি লক্ষ্য করে বিজিবি টহলদল তাকে চ্যালেঞ্জ করলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের মোঃ লুৎফর রহমানের ছেলে মোঃ মোঃ আবুল কাশেম (২৭)-কে ১হাজার ১শত পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করতে সক্ষম হয়।
এছাড়াও, অপর একটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি জানতে পারে, চোরাকারবারীরা কুলাঘাট চেকপোস্ট ব্যবহার করে মাদক পাচারের চেষ্টা করবে। উক্ত তথ্যের আলোকে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩০মিনিটে চেকপোস্টে সন্দেহজনক ব্যক্তিকে তল্লাশি করে শরীরে বিশেষ কায়দায় ফিটিং অবস্থায় ১.২কেজি গাঁজাসহ নাটোর জেলার লালপুর থানার রসুলপুর গ্রামের গুচ্ছগ্রাম মৌজার মোঃ আলতাফ হোসেনের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম-কে আটক করতে সক্ষম হয়।
অপরদিকে, সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাত ৮টা ৪০মিনিটে গংগারহাট বিওপি’র আওতাধীন কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কুটিচন্দ্রখানা এলাকায় টহল পরিচালনাকালীন টহলদল চোরাকারবারীকে চ্যালেঞ্জ করলে সে তার সাথে থাকা মালামাল ফেলে ভারতের দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে তল্লাশি করে ভারতীয় ইয়াবা ট্যাবলেট ৪শত ৮৫পিছ উদ্ধার করা হয়।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর অধিনায়কের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য ভারতীয় ইয়াবা ১হাজার ৫শত ৮৫পিছ, যার সিজার মূল্য ৪লক্ষ ৭৫হাজার ৫শত টাকা এবং ভারতীয় গাঁজা ১.২কেজি, যার সিজার মূল্য ৪হাজার ২শত টাকাসহ সর্বমোট সিজার মূল্য ৪লক্ষ ৭৯হাজার ৭শত টাকা। উল্লেখিত ঘটনায় আটককৃত আসামীদের বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী ও লালমনিরহাট সদর থানায় মামলা দায়েরপূর্বক মাদকদ্রব্যসহ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও মাদক চোরাচালান চক্রের সংশ্লিষ্ঠ অন্যান্য চোরাকারবারীদের তথ্য সংগ্রহপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম পিএসসি বলেন, দেশের যুব সমাজকে মাদক মুক্ত রাখতে বিজিবি সর্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছে। মাদক পাচার রোধে সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে বিজিবি’র গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল তৎপরতা আরও জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া তিনি স্থানীয় জনগণকে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা এবং প্রতিরোধে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং গোপন তথ্য প্রদানকারীদের পরিচয় গোপন রাখার নিশ্চয়তা দেন।
এই অভিযানে বিজিবির সাহসিকতা ও কৌশলগত দক্ষতা প্রশংসার দাবিদার, যা মাদক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।