শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বাড়ি ভাড়া, মেডিকেল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত ১৬কেজি গাঁজাসহ ২জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার অসহায় বিধবার জমি দখলের পায়তারা ভূমিদস্যুর গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৫ সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কার জনক পুলিশি হামলার প্রতিবাদে- অবস্থান কর্মসূচী অনুষ্ঠিত ডিলারগণ কৃত্রিম সার সংকট সৃষ্টি করে দীর্ঘদিন যাবত উচ্চমূল্যে সার বিক্রয় করে এরই প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত ১০দিন ব্যাপী ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠিত ৭৩২বোতল এস্কাফ এবং ১০০পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট জব্দসহ ৪জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার
অদম্য মেধাবী মিথুন রায়-এর ডুয়েটে ভর্তি অনিশ্চিত

অদম্য মেধাবী মিথুন রায়-এর ডুয়েটে ভর্তি অনিশ্চিত

ঢাকা প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েটে) এ অদম্য মেধাবী মিথুন রায়-এর ভর্তি অনিশ্চিত।

 

সে লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার ১নং মোগলহাট ইউনিয়নের কুরুল গ্রামের দিনমজুর মিলন চন্দ্র ও প্রভাতি রাণী-এঁর ছেলে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিজের জায়গা জমি না থাকায় অন্যের জমিতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে দিনমজুরী আয়ে চলে মিলন চন্দ্রের ৫সদস্যের সংসার। অভাব আর অনাটনের মাঝেও সন্তানদের লেখাপড়ায় বেশ আগ্রহী দিনমজুর মিলন চন্দ্র। ১ছেলে ও ২মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বড় ছেলে মিথুন রায় অত্যন্ত মেধাবী। দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জারিত সংসার থেকে খেয়ে না খেয়ে ছেলের লেখাপড়ার খরচ যোগিয়েছেন মিলন চন্দ্র।

 

বড় ছেলে মিথুন রায় ইটাপোতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় হতে ২০২০ সালে জিপিএ-৪.৭২ নিয়ে এসএসসি পাশ করে পরে রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়। টাকার অভাবে লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হলে কলেজের ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে একটি মুদির দোকানের কর্মচারী ও প্রাইভেট পড়ায়ে নিজের খরচ চালান মিথুন রায়। ৪বছর খেয়ে না খেয়ে কঠোর পরিশ্রম করে ২০২৪ সালে ৩.৮৭ পেয়ে ডিপ্লোমা পাশ করে এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়ে দেয়।

 

নিজেকে দক্ষ প্রকৌশলী করতে ঢাকা প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ভর্তির আবেদন করে মিথুন রায়। মুদির দোকানে কর্মচারীর কাজের ফাঁকে পড়ালেখা করে ডুয়েটের ভর্তি যুদ্ধে অংশ নেন। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর কঠোর পরিশ্রমে মিথুন রায় ডুয়েটে বিএসসি পড়তে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সুযোগ আসে জীবনের লক্ষ্যে পৌছাবার। কিন্তু সু-খবরের মাঝে আর্থিক সংকটের দুঃশ্চিন্তা এসে দাঁড়ায়। সুযোগ পেয়েও ডুয়েটে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তার। ডুয়েটে ভর্তি হতে আগামী সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) এর মধ্যে ভর্তি ফি ১০,০০০/- টাকা, বই-খাতা থাকা খাওয়াসহ অনুষঙ্গিক মিলে গুনতে হবে প্রায় ৫০,০০০/- টাকা। যা তার পরিবারের সাধ্যের বাহিরে।

 

ডুয়েটে ভর্তির জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদনও করেছেন মিথুন রায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সাড়া মেলেনি। অপরদিকে ভর্তির দিন ঘনিয়ে আসছে। ফলে দিন যত যাচ্ছে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন মাঝ পথে ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত টাকার কোন ব্যবস্থা হয়নি।

 

ইটোপোতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মকবুল হোসেন বলেন, মিথুন আমার প্রতিবেশি ও আমার ছাত্র। সে অত্যন্ত মেধাবী। তাকে সহায়তা করলে সে তার স্বপ্ন পুরণ করতে পারবে।

 

মিথুন রায়ের মা প্রভাতি রাণী বলেন, হামার মিথুন না কি ইঞ্জিনিয়ার হইবে। সেই জন্য মাইনসের (অন্যের) বাড়িতে ঝিয়ে কাজ করে টাকা দিয়েছি। এলা না কি ঢাকায় ভর্তি হতে ৪০/৫০হাজার টাকা লাগে। হামরা গরিব মানুষ এতো টাকা কোনটে পাই। কায়ো কি আছে মোর বেটাক টাকা দিয়ে পড়াইবে? দিলে ভগবানের কাছে তার জন্য আর্শীবাদ করমো।

 

মিথুনের বাবা মিলন চন্দ্র বলেন, খেয়ে না খেয়ে টাকা দিয়েছি মিথুন পড়ালেখা করেছে। তার স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু গরিব মানুষ তাকে এতো টাকা কেমনে দেই। কোথায় পাবো এতো টাকা। কেউ সাহায্য করলে মিথুন বড় ইঞ্জিনিয়ার হইতো। তাই বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান তিনি।

 

মিথুন রায় বলেন, স্কুল জীবন থেকে স্বপ্ন দেখছি প্রকৌশলী হয়ে দেশের জন্য কাজ করবো। সেই স্বপ্ন পুরণ করতে বার বার প্রতিবন্ধকতা হয়েছে অভাব নামক দানব। তবে সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ডুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। এখন আর পারছি না। একই সঙ্গে এতো টাকা দেয়া আমার পরিবারের পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। মাঝ পথে স্বপ্নের অপমৃত্যুও মেনে নিতে পারছি না। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন করছি। মিথুন রায়ের মোবাইল নং- ০১৯৩৯৪৮৬২৬৫।

 

১নং মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আসাদুল হক মন্টু বলেন, মিথুন গরীব হলেও অত্যন্ত মেধাবী। তাকে সহায়তা করলে সে তার স্বপ্ন পুরণ করতে পারবে। তার স্বপ্ন পুরনে সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা কামনা করেন তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone