লালমনিরহাট জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল (৪২) কে ও তার সহযোগী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোঃ কামরুল হাসান (৩২) কে দেশের রাজধানী ঢাকা থেকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম।
মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার মধ্য গুড্ডিমারী এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানের ছেলে। সে লালমনিরহাট জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানা ও আরএমপি কোতোয়ালি থানার একাধিক মামলা রয়েছে। তার সহযোগী মোঃ কামরুল হাসান (৩২) লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জয় বাংলা ব্রিগেড এর সক্রিয় সদস্য। মোঃ কামরুল হাসান লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম আঙ্গরপোতা সরদার পাড়া এলাকার মোহাম্মদ ফজলুল হকের ছেলে।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে লালমনিরহাট ডিবি পুলিশের ওসি সাদ আহমেদের নেতৃত্বে ঢাকার খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ ০২ ও ধানমন্ডি থানাধীন সোবাহানবাগ এলাকা হতে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়। গত ৫ আগস্ট এর পর থেকে আবু বকর সিদ্দিক শ্যামল ও তার অন্যতম সহযোগী কামরুল বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দ্বারা জনমত গড়ে তোলাসহ দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন- ফেসবুক গ্রুপ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ, ইউটিউব চ্যানেল এবং জুম প্লাটফর্মে পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমান বৈধ সরকারকে উৎখাত করে পলাতক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে এনে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর পরিকল্পনা করেছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সারাদেশের আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সমর্থকদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপের সাথে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জননিরাপত্তা তথা জনশৃঙ্খলার ক্ষতিকর কার্য এবং বর্তমান বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণাবোধ সৃষ্টি এমনকি জনসাধারণের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির অভিপ্রায়ে ধ্বংসাত্মক কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় তাদের কর্মী বাহিনীকে সংগঠিত করছে যা ক্ষতিকর কার্যের শামিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এ ব্যাপারে লালমনিহাট পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম জানান, ডেভিল হান্ট কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকার খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ ০২ এবং ধানমন্ডি থানাধীন সোবাহানবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আটককৃত শ্যামল ও তার সহযোগী ৫ আগস্ট ২০২৪ এর পর স্থানে আত্মগোপনে থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দ্বারা জনমত গড়ে তোলাসহ দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছিলেন। তাদের নামে হাতীবান্ধা ও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়।