রংপুরে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হত্যার অভিযোগে মামলায় এজাহারনামীয় পলাতক আসামিকে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১৩ সিপিএসসি।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১৩ সিপিএসসি রংপুর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমনটিই জানিয়েছেন সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) অধিনায়কের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী।
বাদীর দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায় যে, ভিকটিম খালেকুজ্জামান (৪০) এবং আসামিগণ পরস্পর একই গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৩১ অক্টোবর সকাল ৭টায় ভিকটিমের দাদির কবরের মাটি সরানোর বিষয় নিয়ে আসামিগণের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে আসামিগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি ও লোহার রড দ্বারা মাথায় সজোরে আঘাত করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের স্বজন ও স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেলে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে রংপুর মেডিকেলে হাসপাতালের আইসিইউতে প্রেরণ করেন। গত ১ নভেম্বর সকাল ৭টা ৫মিনিটে ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে রংপুর জেলার তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলার দায়ের করেন। যার মামলা নং-১, জিআর নং-১৩৫/২০২৫, তাং- ০১/১১/২০২৫ খ্রিঃ, ধারা- ১৪৩/১৪৯/৩২৩/৩২৬/৩২৬/৩০৭/ ৫০৬(২)/১১৪/৩০২ পেনাল কোড-১৮৬০।
ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও লোমহর্ষক হত্যা হওয়ায় এলাকায় ব্যাপকভাবে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই গ্রেফতার এড়াতে আসামিগণ চতুরতার সাথে আত্মগোপনে ছিলো। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং আসামি গ্রেফতারে সচেষ্ট হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় সুনির্দিষ্ট তথ্য ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৩ সদর কোম্পানী রংপুর এবং র্যাব -১০ সিপিএসসি, কেরানীগঞ্জ ক্যাম্প চাঞ্চল্যকর উক্ত হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ২নং আসামি রংপুর জেলার তারাগঞ্জ থানার কিসামত মেনানগর এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে লেবু মিয়া (৪০) কে ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাধীন কোনাখোলা দেয়াসুর মহুয়া নার্সারী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও এ ধরনের প্রতিটি সহিংস ঘটনার প্রতিরোধে র্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ভাবে কাজ করছে এবং চলমান এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’- এই মূলমন্ত্রকে বুকে ধারন করে এলিট ফোর্স র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন চাঞ্চল্যকর হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, রাহাজানিসহ মারাত্মক সব সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। হত্যার মতো মারাত্মক সামাজিক অপরাধের ক্ষেত্রে র্যাব অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে থাকে।