শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বাড়ি ভাড়া, মেডিকেল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত ১৬কেজি গাঁজাসহ ২জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার অসহায় বিধবার জমি দখলের পায়তারা ভূমিদস্যুর গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৫ সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কার জনক পুলিশি হামলার প্রতিবাদে- অবস্থান কর্মসূচী অনুষ্ঠিত ডিলারগণ কৃত্রিম সার সংকট সৃষ্টি করে দীর্ঘদিন যাবত উচ্চমূল্যে সার বিক্রয় করে এরই প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত ১০দিন ব্যাপী ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠিত ৭৩২বোতল এস্কাফ এবং ১০০পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট জব্দসহ ৪জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার
অবশেষে বসন্ত এসেছে

অবশেষে বসন্ত এসেছে

সুলতানা শিরীন সাজি

অবশেষে বসন্ত এসেছে। সকাল বেলা জানালার ব্লাইন্ডস সরালে সবুজ পাতার ঝিরঝির দেখলে মনে ভালো হয়ে যায়। মে মাস এর শেষে এসে এবার ঝকঝকে রোদের দিন। কতদিন হয়ে গেলো এই বন্দী জীবন, গুনতে ইচ্ছে করেনা। প্রতিদিনের বেঁচে থাকার আনন্দ নিয়ে সামনে তাকাই। মে মাস শুরু হলে রাইয়ানের দিনগোনা শুরু হয়। আমাদের ছোট্ট রাইয়ান সিঁড়ি দিয়ে নামা, উঠা করতে করতেই বড় হয়ে গেলো, আমি একথা প্রায়ই বলি। সিনেমার দৃশ্যের মত হুট করে বড় নাহলেও, মানুষের বড় হওয়াটা আসলে এমনি!
সেকেন্ড, মিনিটের ঘন্টার যোগফলে দিন এরপর মাস, বছর গড়ায়। আর মা বাবার কাছে মনেহয় এইতো সেদিন! জন্মের দিনটা নির্ভূল মনে পড়ে যায়। রাইয়ানের জন্মানোতে সবচেয়ে আনন্দ রাশীকের। এত আদর করেছে ছোটবেলায়। এখনো সব সময় খেয়াল করে।
রাশীক যখন স্কুল এ পড়ে। ওয়ান টুতে পড়ার সময় প্রায়ই বলতো একটা বেবী নিয়ে আসো। রাশীকের খুব চাওয়া ছিল একটা ভাই। রাইয়ান আসলেই খুব লাকি ওর রাশীকের মত একটা ভাই আছে। রাইয়ান ছোটবেলায় একবার পড়ে ব্যথা পেয়েছিল, রাইয়ান আর কি কাঁদবে, রাশীক এর কান্না থামানো মুশকিল হয়ে গিয়েছিল।
ভাইবোন, ভাই ভাই এর সাথে যত সুন্দর স্মৃতি থাকে, ভালোবাসা থাকে সেটা আর কোন সম্পর্কে হয়না। সারাজীবন দুঃখ সুখে ওরা যেনো পাশে থাকে, এটাই প্রার্থনা।

১৮ বছর বয়সটা দারুণ! মানুষের বড় হতে চাওয়া, নিজে নিজে অনেককিছু করতে চাওয়ার এক আশ্চর্য্য সময়! রাইয়ান সেই ১৮ কে ছুঁলো ২০ মে। ইফতারের আগে ওর জন্য আনা কেক নিয়ে বাসার পিছনে গেলাম সবাই। বাসার পিছনে টেবিলে কেক কাটলাম।
রাইয়ান মোমবাতি ফুঁ দিলো। বললাম কি উইশ করলিরে বাবা, বলে অনেক কিছু।
আমি শুধু প্রার্থনা করলাম, বেঁচে থাক বাবা, সুস্থ্যতায়
তাহলেই তোর অনেককিছু ইচ্ছা পূরণ হবে!

রোজা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এবার মন খারাপ লাগছে। সবাই মিলে নামাজ, ডাইনিং টেবিলে আমাদের সাথে এই প্রথম বাসমাহ। কথা, হৈচৈ। তর্ক, ঝগড়া সব হচ্ছিল নিয়মিত। বাসমাহকে বলছিলাম, আমাদের এই হৈ চৈ দেখে অবাক হয়োনা। আমাদের বাসায় কোন ঝগড়া, রাগ নিয়ে কেউ ঘুমাইনা আমরা। এটাই নিয়ম!
জীবনের স্বাভাবিকতা এইসবেই। জীবন মানেতো শুধু সমসৃণ চলা হয়।

রাশীকের বাবার ভীষন দূর্বলতা রাইয়ানের উপর। ওর প্রথমবার ক্যান্সার হয়েছিল যখন, রাইয়ান মাত্র ১৪ মাস তখন। রাশীকের বাবা বলেছে রাইয়ানকে দেখে দেখেই ও বেঁচে থাকার শক্তি পেয়েছে। কেবল হাঁটতে শেখা রাইয়ান তখন সারাদিন দুষ্টুমী করতো, ফুলের টবে মাটি খেতো। রাশীক স্কুল থেকে ফিরিলে কিযে খুশি হতো!

আমাদের বাসার সবচেয়ে ছোট মানুষ, এখন মাথাতে সবার চেয়ে লম্বা। অদ্ভুত এক সরলতা আছে ওর। বাসাতে ঢুকেছে সেই কবে মার্চ এ। বাবার কথা চিন্তা করে রাশীক, বাসমাহ, রাইয়ান কেউ ই কোথাও যায়না। রাইয়ান একদিনো একা বের হতেও চায়না। যদি বের হতে চাইতো না করতে পারতাম না। দিনের মধ্যে অনেকবার বাবার ঘরে ঢুকে প্রশ্ন করে, কিছু চায় কিনা, পানি ভরিয়ে দেয় বোতলে।

আমাদের রাশীক, রাইয়ান দুজনেই খুব সাধারণ। লেখাপড়া নিয়ে ওদেরকে কোন প্রেশার কখনো দেইনি।দেইনা। রাশীককে কখনো পড়তে বলতে হয়নি। ও আজ জীবনে দাঁড়িয়ে গেছে। রাইয়ানকে মাঝে মাঝে বলতে হয়। কেউ কারো মত হয়না। পৃথিবীতে সব মানুষ ইউনিক। তবু রাইয়ান ভাই এর মত হতে চায়। এই হতে চাওয়া যে কখনো যদি হয়ে ওঠে, তা ওর নিজস্বতায় হবে। এতে আমাদের কোন হাত নেই। আর যদি নাও হয়। ও ওর মতই হোক। ওরা ভালো থাক সুস্থ থাক। ভালোবাসতে শিখুক। প্রকৃতিকে। মানুষকে। এর উপর আর কি আছে পৃথিবীতে?
আশীবার্দ করছি রাইয়ান এর জন্য।

শুভ জন্মদিন রাইয়ান
Happy Birthday to you Ryan
ভালো মানুষ হোস বাবা।
তোদের দেখতে দেখতে তোদের বাবা আবার ভালো হয়ে উঠুক।

পৃথিবী থেকে দূর হোক মহামারী।
শুভকামনা সবার জন্য।সবাই যেনো ভালো থাকি। নিরাপদে থাকি।

২২ মে, ২০২০
অটোয়া

★সুলতানা শিরীন সাজি-র ফেসবুক থেকে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone