শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে আমন চাষাবাদে বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের! স্বাধীনতার ৫৩বছর পেরিয়ে গেলেও লালমনিরহাটের খোরারপুলে হয়নি সেতু! লালমনিরহাটে মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত হাত বদলে বাড়ে সবজির দাম; বঞ্চিত হন লালমনিরহাটের চাষিরা! ছাত্রদলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি; মুছলেকা দিয়ে ছাড়া পেলো যুবক! বিজিবি ও ছাত্রজনতা স্বেচ্ছাশ্রমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সীমান্ত রাস্তা মেরামত! লালমনিরহাটের চাষীদের বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে লালমনিরহাট জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে বিলুপ্তির পথে মাষকলাই (ঠাকরি কালাই) চাষ! লালমনিরহাটে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জনসচেতনতা মূলক নাটক প্রদর্শন অনুষ্ঠিত
ঝড়ে ভেঙে পড়লো লালমনিরহাটের ঐতিহ্যবাহী হালাবট গাছ!

ঝড়ে ভেঙে পড়লো লালমনিরহাটের ঐতিহ্যবাহী হালাবট গাছ!

গত ১ জুন রাত ৮টার পর হঠাৎ করে কালো মেঘে ঢাকা পড়েছিলো লালমনিরহাট। আকাশে মেঘের ঘনঘটার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ঝড় আর প্রচন্ড বৃষ্টি। কালো মেঘের বৃষ্টির আর ঝড়ে ভেঙ্গে পড়েছে লালমনিরহাটের কিংবদন্তীমূলক স্থান হালাবটের তলের সেই বহু পুরানো ঐতিহ্যের হালাবট গাছ।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, কিছুক্ষণ ঝড় হাওয়ার পরে মর মর বিকট শব্দে হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ে এই বট গাছ। ক্রমাগত সবুজ হারানো এই লালমনিরহাট শহরের হালাবটের তল হিসেবে পরিচিত সবুজের এক বড় আশ্রয় গাছটি। এ বটগাছটির তলে রয়েছে প্রচুর ঘাস।

ভেঙে পড়া বটগাছের পাশে দাঁড়ানো একাধিক প্রবীণদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা জন্মের পর থেকে এই গাছ দেখে আসছে। লালমনিরহাটের পুরাতন ঐতিহ্যের গাছগুলোর মধ্যে এই বটগাছ অন্যতম। হঠাৎ ঝড়ে ভেঙে পড়ায় লালমনিরহাটবাসী একটি ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষ হারালো।

এতে ঈদ গাহ মাঠের মিনারে আশ্রয় গ্রহণকারী ৩জন গুরুত্বর আহত হয়। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, লালমনিরহাট জেলার একটি কিংবদন্তীমূলক স্থানের নাম ‘হালাবটের তল’। প্রায় দেড় একর জমি জুড়ে বিস্তৃত অতি পুরানো এ বটগাছের অবস্থান লালমনিরহাট পৌরসভাধীন সাপটানা (উত্তর) মৌজায় লালমনিরহাট-কুলাঘাট সড়কের উত্তর পাশে।

জনশ্রুতি থেকে জানা যায় যে, বটগাছটির বয়স নূন্যতম ১৩০বছর। গাছের নিচের ঈদের মাঠটি আরও পুরানো। পাকিস্তান আমলে (১৯৫১-৫২খ্রিষ্টাব্দে) স্থানীয় খতি ফকির জৌনপুরের জনৈক পীর সাহেবকে এনেছিলেন ওয়াজ করার জন্য। পীর সাহেব এ গাছের নিচে বসে ওয়াজ করেছিলেন। আগত লোকজনদের ওজু করার জন্য মাঠের পাশে একটি কুয়া খনন করা হয়েছিল। কিন্তু কুয়ায় পানির অপর্যাপ্ততার কারণে ওজু করার সমস্যা সৃষ্টি হয়। এতে পীর সাহেব এক বদনা পানি নিয়ে সেটি কুয়ায় ঢেলে দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে আর ওজুর পানির অভাব হয়নি। আবার ওয়াজ শেষে খিচুরী বিতরণের সময় তাও কম হওয়ার আশংকা দেখা দিলে পীর সাহেব খিচুরীর হাড়ির মুখে ঢাকনা দেন। পরে তার নির্দেশ অনুযায়ী ঢাকনা একটু সরিয়ে খিচুরী বিতরণ শুরু করা হয়। ঐ হাড়ির খিচুরী আগত লোকজনের মাঝে বিতরণ শেষে পার্শ্ববর্তী কয়েক গ্রামের লোকজন যারা ওয়াজ শুনতে আসেনি তাদের জন্যও পাঠিয়ে দেয়া সম্ভব হয়। পীর সাহেব ওয়াজ করে চলে যান, কিন্তু ওয়াজ করার মাঠটি এলাকার লোকজনের কাছে পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হতে থাকে, সাথে সাথে সাহেবকে ছায়াদানকারী বট গাছটির প্রতিও বিশেষ সম্মান দেখানো শুরু হয়। দু’একজন এখানে এসে মানত করে সুফল পাওয়ার পর পাকিস্তান আমলেই মানতের প্রচলন হয়। আর তা ব্যাপকতা লাভ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর। এখনও প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক লোকজনকে মানতের উদ্দেশ্যে এখানে আসতে দেখা যায়।

লালমনিরহাট জেলা সদর হতে সড়ক পথে গাড়ী কিংবা রিকসা নিয়ে এখানে যাওয়া যায়।

অপরদিকে লালমনিরহাটের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড় ও বৃষ্টিতে পাকা ধান, ভুট্টা ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া বেশকিছু বাড়ি-ঘরেরও ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone