শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে ফল উৎসব-২০২৫ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাট জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি গঠন চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই বিএনপির কর্মীকে কারাদণ্ড, প্রতিবাদে থানা ঘেরাও করে হামলা ভাংচুর : ৮ পুলিশসহ আহত অন্তত ২০ প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় রিকশাচালক গ্রেফতার চাকরিচ্যুত হলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি ঐতিহ্যবাহী মোগলহাট জিরো পয়েন্ট এখন শুধুই স্মৃতি; দর্শনার্থীদের ভিড় সময়ের প্রয়োজনে ও রক্তের বিনিময়ে এনসিপি গঠিত হয়েছে- লালমনিরহাটে এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ; ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন কালের আবর্তে বিলুপ্তির পথে মহিষ ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস পরিদর্শন
ঐতিহ্যবাহী মোগলহাট জিরো পয়েন্ট এখন শুধুই স্মৃতি; দর্শনার্থীদের ভিড়

ঐতিহ্যবাহী মোগলহাট জিরো পয়েন্ট এখন শুধুই স্মৃতি; দর্শনার্থীদের ভিড়

লালমনিরহাট জেলা শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি ইউনিয়নের নাম মোগলহাট। ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে মোগল সুবেদার সায়েস্তা খাঁ-এঁর পুত্র এবাদত খাঁ ঘোড়াঘাটের ফৌজদার থাকাকালীন কোচবিহার অভিযানের সময় এখানে ছাউনি স্থাপন করার কারণে জায়গাটির নাম “মোগলহাট” হয়েছে বলে জানা যায়।

 

বৃটিশ শাসনের গোড়ার দিকে নূর উদ্দীন বাকের জঙ্গ-এঁর নেতৃত্বে সৃষ্ট কৃষক বিদ্রোহের সময় মোগলহাট একটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে রঙ্গপুরের কালেক্টর রিচার্ড গুডল্যান্ড ও সেনাধ্যক্ষ মিঃ ম্যাকডোলান্ড সৈন্যবাহিনীসহ অতিক্ষিপ্ততার সাথে মোগলহাটে আক্রমণ চালিয়ে ছিলেন এবং উভয় বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে হয়েছিল বলেও জানা গেছে।

 

ঐতিহাসিক স্থান ও মোগলহাটে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে রেলওয়ে স্টেশন স্থাপিত হয়। সে সময় মোগলহাটের ওপর দিয়ে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গিদালদাহ হয়ে ধুবড়ী পর্যন্ত রেল যোগাযোগ ছিল। দেশ বিভাগের পর এ স্থান একটি সীমান্তবর্তী এলাকায় পরিণত হয়। দেশ বিভাগের সময় রোপিত বট গাছটি বর্তমানে আর নেই। ধরলা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। যা বাংলাদেশ-ভারত এর জিরো পয়েন্টে একটি জীবন্ত পিলার হয়ে ছিল এক সময়। এখন শুধুই স্মৃতি।

 

মোগলহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার উত্তরে ভারতের গিদালদাহ, যেখানে ধরলা নদীর ওপর রয়েছে তিস্তা রেলওয়ে সেতুর ন্যায় অপর একটি সেতু। যার নাম “গিদালদাহ সেতু”। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ পথ দিয়ে ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে কাঠ, কয়লা, পাথর, সার ইত্যাদি আনা হতো। নদী ভাঙ্গনের ফলে ভারতের সাথে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তা বন্ধ হয়ে যায়। পরে মোগলহাট রেলওয়ে স্টেশনটি একটি অলাভজনক স্টেশন হিসেবে বিবেচিত হলে ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে লালমনিরহাট থেকে মোগলহাট পর্যন্ত রেল যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায়।

 

পাসপোর্টধারীরা উভয় দেশের যাতায়াত করতে দীর্ঘদিন যাবত এ রুট ব্যবহার করে আসছিলেন। ২০০২ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাস থেকে তাও বন্ধ রয়েছে। ব্যস্ততার অতীত স্মৃতি ধারণ করে এখন নীরবে দাঁড়িয়ে রয়েছে সার্চ টাওয়ার। রেলওয়ে স্টেশন ভবন, পুলিশ-ইমিগ্রেশন চেক পোস্টসহ আরও কতিপয় দফতর। তবে পাশে বিজিবি ক্যাম্পটি বর্তমানে সচল রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, রেলওয়ে স্টেশনের মূল্যবান জিনিসপত্র এবং রেলওয়ে লাইনের ‘লাইন’ লুটপাট ও চুরি হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার মাথাব্যথা নেই। বর্তমানে সীমান্ত সংলগ্ন ধরলা নদীর পাড়ে ভ্রমণ পিপাসু দর্শনার্থীদের উপস্থিতি লক্ষণীয়। এরই ধারাবাহিকতায় মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে দর্শনার্থীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

 

মোগলহাটে যেতে হলে, প্রথমে আপনাকে লালমনিরহাট শহরে যেতে হবে। লালমনিরহাট শহর থেকে মোগলহাটের দূরত্ব প্রায় ১০কিলোমিটার। আপনি বাস, অটোরিকশা, সিএনজি বা রিকশা দিয়ে মোগলহাট যেতে পারেন।

 

লালমনিরহাট থেকে মোগলহাটে যাওয়ার উপায়গুলো নিচে দেওয়া হলো:

বাস: লালমনিরহাট থেকে মোগলহাটের উদ্দেশ্যে নিয়মিত বাস চলাচল করে। আপনি বাস টার্মিনাল থেকে বাসে করে মোগলহাট যেতে পারেন। তবে দুড়াকুটি পর্যন্ত।

অটোরিকশা/ সিএনজি: লালমনিরহাট শহর থেকে মোগলহাটের উদ্দেশ্যে অটোরিকশা বা সিএনজি পাওয়া যায়।

রিকশা/ভ্যান: যারা অল্প দূরত্বে যেতে চান, তারা রিকশা বা ভ্যান ব্যবহার করতে পারেন।

 

উল্লেখ্য যে, মোগলহাট একটি ঐতিহাসিক স্থান এবং এক সময় এখানে স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ছিল। আপনি যদি মোগলহাট স্থলবন্দর এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখতে চান, তাহলে এই উপায়গুলো ব্যবহার করে সহজে যেতে পারবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone