শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
আদিতমারী উপজেলায় বোনের বাল্য বিয়ে বন্ধে মা, মামা ও খালার বিরুদ্ধে ছেলের থানায় অভিযোগ

আদিতমারী উপজেলায় বোনের বাল্য বিয়ে বন্ধে মা, মামা ও খালার বিরুদ্ধে ছেলের থানায় অভিযোগ

আলোর মনি রিপোর্ট (আদিতমারী), লালমনিরহাট:

 

লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের গন্ধমরুয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী কে তার মা বিয়ে দেয়ার জন্য খালুর বাড়িতে আশ্রিতা মেয়েকে নিয়ে যায়। এই বাল্য বিয়েতে বড় ভাই স্বাধীন মিয়া (১৬) রাজি নয়। সে বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে আদিতমারী থানায় মা, মামা, খালার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। ৯দিন অতিবাহিত হলেও বোনের কোন খোঁজ মিলেনি।

 

জানা গেছে, স্বাধীন মিয়া ও তার ছোট বোন ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ৭বছর ধরে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের সটিবাড়ি গ্রামে খালা নুর বানু ও খালু আবুল মতিনের বাড়িতে আশ্রিতা হিসেবে থাকে। খালা-খালু নিজ সন্তানের মত করে তাদের বড় করছে। ৭বছর আগে মা বাবার মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। মা ঢাকা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। বাবা অন্যত্র বিবাহ করে স্ত্রী সঙ্গে বসবাস করে। তাদের কোন অভিভাবক নেই। খালা-খালুই তাদের বর্তমান অভিভাবক। করোনা পরিস্থিতি মা রহিমা বেগম (৪০) ঢাকায় বেকার হয়ে পড়ে তাই পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষ্যে মা তার বাবার বাড়ি দূর্গাপুরের গন্ধমরুয়া গ্রামে আসে। খালার বাড়ি হতে মেয়েকে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যায়। মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে একই উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের মাস্টার পাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের পুত্র গরুর ব্যবসায়ী ইব্রাহিম (২৮) এর সাথে বিয়ে ঠিক করে। এই বাল্য বিয়েতে বড় ভাই স্বাধীন মিয়া (১৬) পেশা ভ্যান চালক রাজি নয়। গত ২৭ মে আদিতমারী থানায় মা (রহিমা বেগম), গ্রাম্য মামা (পল্লী চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম), খালা (মেহের বানু) ও মামা ( খয়বর আলী) বিরুদ্ধে জোরপূর্বক তার ছোট বোনকে বিয়ে দেয়ার অভিযোগ দায়ের করে। বর্তমানে তার ছোট বোন কোথায় আছে কি অবস্থায় আছে। সে কিছুই জানেনা। বোনের সন্ধান পেতে সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।

 

স্বাধীন মিয়া সাংবাদিকদের জানান, মা-বাবা সন্তানের ভালোমন্দ সিদান্ত নেয়। বাবা তো অন্যত্র বিয়ে করে খোঁজ নেয় না। মা ৭বছর আগে খালা-খালুর কাছে আমাদের আশ্রিতা রেখে গেছে। এখন বোনের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে এসেছে। আমি নিজে লেখাপড়া শিখতে পারিনি। তাই ভ্যান চালিয়ে ছোট বোনকে শিক্ষিত করতে চেয়ে ছিলাম। শুনেছি বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন কি হবে।

আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগ পেয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধে থানা পুলিশ পদক্ষেপ নিয়েছে। মা ও স্বজনদের বাল্য বিয়ে না দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। ছেলে মেয়ে ২টি মা-বাবার ভালোবাসা হতে বঞ্চিত। তাদের পারিবারিক বন্ডিং নেই। শুনেছি কিশোরী মেয়েটি তার মায়ের কাছে আছে। বাল্য বিয়েটি যাতে না হয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বারকে বলা হয়েছে। কিশোর-কিশোরীদের প্রেমের ঘটনায় কোন কোন ক্ষেত্রে বাল্য বিয়ের বিষয়গুলো এমন জটিল আকার ধারণ করে। তখন আইনের চেয়ে মানবিকতা সেখানে প্রাধান্য পায়। থাকে রাজনৈতিক ও সমাজপতিদের চাপ।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone