শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া রিফার কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত

এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া রিফার কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত

আলোর মনি রিপোর্ট: জান্নাতুল ফেরদৌসী রিফার বাবা নেই। তার মায়ের উপার্জন আর বোনের টিউশনির টাকায় চলে সংসার। পরিবারে অভাব ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। এরপরও টিউশনি করে লেখাপড়া চালিয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌসী রিফা। শতকষ্টকে পেছনে ফেলে সব বাধা পেরিয়ে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা-২০২০ এ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ (গোল্ডেন এ প্লাস) পেয়েছে জান্নাতুল ফেরদৌসী রিফা। সে পঞ্চম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ ও অষ্টম শ্রেণিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এসএসসিতেও জিপপিএ-৫ পেয়েছে।

জান্নাতুল ফেরদৌসী রিফার বাড়ি লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জমগ্রামে। তার বাবা আজিজার রহমান প্রায় ৮বছর অসুস্থ থাকার পর ২০১৭ সালে মারা যান। মা আশরাফোন নেছা গৃহিনী। তার মায়ের সামান্য উপার্জন ও দুই বোনের টিউশনির সামান্য আয়ে চলে তাদের সংসার ও পড়ালেখা। ৬মেয়ের মধ্যে জান্নাতুল ফেরদৌসী রিফা চতুর্থ। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। দ্বিতীয় বোন আল্পনা আক্তার পড়েন রংপুর কারমাইকেল কলেজে মাস্টার্সে। তৃতীয় বোন সালমা আক্তার পড়েন করিম উদ্দিন পাবলিক কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে। পঞ্চম বোন রাজিয়া সুলতানা ঐশী পড়ে বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। সে পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছে। সবার ছোট বোন হুমায়রা মেহজাবিন রিংকি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।

জান্নাতুল ফেরদৌসী রিফা সাংবাদিকদের বলেন, আমার সকল কষ্ট সার্থক হয়েছে। আমি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে প্রকৌশলী হয়ে দেশের মানুষের সেবা করতে চাই। তাই নিজের লেখাপড়ার করার জন্য সমাজের শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির সহযোগিতা কামনা করছি।

মা আশরাফোন নেছা সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়ে রিফা মাঝে মাঝে অনাহারে স্কুল যেতো। পরিবারে লোকজন বেশি। তাই আমার সামান্য আয় দিয়ে সংসার চলে না। অভাবের কারণে রিফাসহ আরো দুই মেয়ে টিউশনি করে। মেয়েদের টিউশনির টাকায় তাদের পড়ালেখা ও কোনো রকমে সংসার চলছে। সে প্রত্যেক ক্লাসে ভালো ফলাফল করেছে। হাইস্কুলে লেখাপড়া করা অবস্থায় স্থানীয় সাংসদ মোতাহার হোসেনের দ্বিতীয় ছেলে কম্পিউটার প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন মাসুদ সহযোগিতা করেছিল। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের তো আর সামর্থ নেই মেয়েকে কলেজে পড়াতে। এখন কোনো দানশীল ব্যক্তি যদি তার লেখাপড়ার খরচ বহন করে তাহলে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে।

বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার সাংবাদিকদের বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌসী রিফা খুবই মেধাবী ও ভদ্র। গরিব হওয়ার কারণে আমাদের স্কুলে তাকে লেখাপড়ার উপকরণ ও ফ্রি পড়ানোর ব্যবস্থা করেছি। তার মা খুবই গরিব। যদি দেশের কোনো শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি তাকে পড়াশোনার সহযোগিতা করেন, সে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবে। ভবিষ্যতে ভালো কিছুও করবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone