শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে উপজেলা চেয়ারম্যান ৭, ভাইস চেয়ারম্যান ১০, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৬জন বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থী; ১জন চেয়ারম্যানের মনোনয়নপত্র বাতিল! প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৪ শুভ উদ্বোধন এবং আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত মানবিক সহায়তা (ঢেউটিন ও টাকা) বিতরণ অনুষ্ঠিত এমদাদুল সিন্ডিকেটের এক সদস্য গ্রেফতার! সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সাবেক ইউপি সদস্য গুলিবিদ্ধ লালমনিরহাটের ২টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৮জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ লালমনিরহাটের শখের বাজার সড়কের পথচারীরা, কর্তৃপক্ষ নির্বিকার লালমনিরহাটে বিলুপ্তির পথে ঘুঘু পাখি! একুশ বছর সেই বাসী চাঁদ
লালমনিরহাটে তিস্তা নদী এখন ভূমিদস্যুদের দখলে

লালমনিরহাটে তিস্তা নদী এখন ভূমিদস্যুদের দখলে

আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: বর্ষাকালে বন্যায় তিস্তা নদীর হিংস্র স্রোতে বিলীন হয় বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি। আর শুস্ক মৌসুমে জেগে ওঠা ধু ধু বালুচর দখলে নিতে চলে গ্রামবাসীর সাথে ভূমিদস্যুদের সংঘর্ষ। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় সেটেলমেন্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সরকারি খতিয়ানভুক্ত প্রায় ৪০একর জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নেন আমিন উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলাও দায়ের হয় আদালতে। ভারতের সিকিম উপত্যকা থেকে সৃষ্ট তিস্তা নদী ভারতের ভূমি বেয়ে নীলফামারীর খড়িবাড়ি হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তিস্তা নদী লালমনিরহাট জেলার দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে ৫টি উপজেলাকে প্রবাহিত করে ব্রহ্মপুত্রে মিশে গেছে। উজানে ভারত সরকার গজলডোবা বাঁধ নির্মাণ করে একতরফা নদী শাসন করছে। ফলে বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি বাংলাদেশে ধেয়ে বন্যা আর তীব্র ভাঙনের কবলে পড়ে এবং শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে বাংলাদেশ অংশ মরুভূমিতে পরিণত হয়। বর্ষাকালে বন্যার প্রবল স্রোতে লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার অসংখ্য বাড়ি-ঘর ও মাইলের পর মাইল ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়। এসব জমি শুস্ক মৌসুমে পুনরায় জেগে ওঠে। শুস্ক মৌসুমে জেগে ওঠা এসব জমি দখলে নিতে তৎপর হয়ে ওঠে ভূমিদস্যুরা। চলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও পাল্টা-পাল্টি মামলা। মামলা নিস্পত্তি না ঘটতেই পুনরায় বন্যায় সবকিছু তিস্তায় বিলীন হয়। এভাবে প্রতিনিয়ত জমি হারানোর ভয় তাড়া করে চরাঞ্চলের মানুষদের। নদীগর্ভে বিলীন হওয়া জমি রেজিস্ট্রি মূলে মালিকানা বিক্রি হয় না। তবে অনেকেই অভাবে পড়ে জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করেন। তবে তা নামমাত্র দামে। বিধিসম্মত না হলেও চরাঞ্চলের জমি বিক্রির এ নিয়ম মান্ধাতা আমল থেকে চলে আসছে। এক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয়েও প্রতারণার স্বীকার হন বলেও চরবাসীর অভিযোগ। এ চিত্র লালমনিরহাট জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক চরাঞ্চলে। অতি সাম্প্রতিক সময়ে কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের শালহাটি নোহালি মৌজার মৃত সিদ্দিক আলীর পুত্র আমিন উদ্দিনের একক নামে ২১নং খতিয়ানের ৩৯.৭০একর জমি বি.আর.এসে রেকর্ডভুক্ত হয়, যা তাদের স্ট্যাম্পমূলে কেনা জমি বলে দাবি। অপরদিকে স্ট্যাম্পমূলে বিক্রেতাগণ বর্তমানে সেই জমি রেকর্ডভুক্ত হওয়ায় তা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, তিস্তার চরাঞ্চলের এসব জমি সরকারি খাস খতিয়ানে রেকর্ড করার কথা। কিন্তু তৎকালীন সেটেলমেন্ট কর্মকর্তাদের অবৈধ সুযোগ দিয়ে সরকারি খতিয়ানভুক্ত জমি নিজের নামে রেকর্ড করেন নেন আমিন উদ্দিন। সেই রেকর্ড সংশোধন ও তৎকালীন সেটেলমেন্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করে ভূমি সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে মিজানুর রহমান। সাম্প্রতি এই প্রায় ৪০একর জমি দখল নিয়ে আমিন উদ্দিন গংদের সাথে গ্রামবাসীর কয়েক দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে। এ নিয়ে উভয় পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা দায়ের করেছে।

ওই গ্রামের আব্দুস সালাম ও মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবছর বর্ষাকালে নদী ভাঙনে সবকিছু বিলীন হয় এবং শুস্কমৌসুমে তা জেগে ওঠে। সরকারি খতিয়ানভুক্ত জেগে ওঠা এসব চরে স্থানীয় ভূমিহীনরাই চাষাবাদ করে সংসার চালায়। কিন্তু টাকার বিনিময়ে এসব খাস জমি নিজ নামে রেকর্ড করে দখল করেন আমিন উদ্দিন গংরা। প্রতিবাদ করায় জমির দখলদার ভূমিহীন পরিবারগুলোকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন আমিন উদ্দিন গংরা। খাস জমি উদ্ধার করে ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণ করতে সরকারের ঊর্দ্ধতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।

তবে এসব অভিযোগ নিয়ে রেকর্ডমূলে জমির মালিক আমিন উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তার রেকর্ডকৃত জমির স্ট্যাম্পমূলে ক্রয়ের কাগজপত্র দেখিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, চরাঞ্চলের জমি আগে খাস খতিয়ানভুক্ত থাকায় রেজিস্ট্রিমূলে বিক্রি করা সম্ভব ছিল না। এ কারণে স্ট্যাম্পমূলে চরাঞ্চলের জমি ক্রয় করেছি। ১৯৮০-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব বালুচর কম দামে ক্রয় করেছি। এখন জমি জেগে ওঠায় দাতার উত্তরাধিকাররা অস্বীকারের চেষ্টা করছে। আমার বৈধ কাগজপত্র দেখে সেটেলমেন্টের সার্ভেয়াররা রেকর্ড করেছেন। সরকার দেখে-বুঝে আমার নামে রেকর্ড করেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone