শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।

জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকির চিঠিতে যা আছে

লালমনিরহাট জেলা কারাগার

আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের উত্তরের জেলা লালমনিরহাট কারাগারে থাকা জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি পাওয়ার পর সারা দেশের ৬৮ কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সব কারাগারে কারারক্ষী ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা কামাল পাশা। তবে হুমকির ঘটনার বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও শনাক্ত হয়নি হুমকিদাতা।

এদিকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর ও জেল সুপার কিশোর কুমার নাগকে হুমকি দিয়ে লেখা চিঠিতে কি আছে, তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও কারাগারগুলোতে বিষয়টি বেশ আলোচিত হচ্ছে।

 

জেলা প্রশাসক ও জেল সুপারকে হুমকি দিয়ে পাঠানো সেই চিঠি ও খামটির কপিতে দেখা যায়-মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার সিঙ্গাইর ইউনিয়নের ঠিকানা ব্যবহার করে প্রেরক ‘ইমরান খাঁন’ নামে এক ব্যক্তি পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ওই চিঠি পাঠান। হুমকির একটি চিঠির খামের ডান পাশে প্রাপকের ঠিকানায় লেখা হয়েছে জেল সুপার, জেলা কারাগার, থানা-সদর, জেলা-লালমনিরহাট। অন্যদিকে জেলা প্রশাসক আবু জাফরকেও একইভাবে চিঠি পাঠানো হয়।

 

কম্পিউটার কম্পোজ করা খামের ভেতরের চিঠিতে দুই লাইনে লেখা আছে, ‘আপনার জেলা কারাগারে বন্দি আমাদের সাথী-সঙ্গী ভাইদের উঠিয়ে নিয়ে যাবো। যতো ক্ষমতা ও শক্তি আছে চেষ্টা করুন। কোনও লাভ হবে না। কঠিন হামলা করে হলেও আমাদের সাথী ভাইদের নিয়ে যাবোই যাবো।’

 

চিঠির নিচে ডান দিকে শুধুই ‘ইমরান খাঁন’ আর বাম দিকে ‘সময়: দুপুর ২টা, ১৩/০৯/২০২০’ লেখা রয়েছে। চিঠির খামে অতি জরুরি ও গোপনীয় লিখা ছিল। তবে প্রেরকের ঠিকানার নিচে কলম দিয়ে ০১৭১৪-৯৭৭৫৩৩ মোবাইল নম্বর এবং প্রাপকের নিচে ইংরেজি বড় অক্ষরে জিইপি ও সংখ্যা ৩৮৪ ও ০৬/০৯/২০ লেখা রয়েছে।

 

এদিকে ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার ফেরারি আসামি ও কেন্দ্রীয় শিবির নেতা আবু তাহের গত ১০ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এই ঘটনার দুই দিন পর শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক ও জেল সুপারের মোবাইলে টেলিটক নম্বর থেকে সঙ্গী-সাথীদের ছিনিয়ে নেয়ার হুমকি আসে। ধারণা করা হচ্ছে তারই কোনও সঙ্গী এমনটা করতে পারে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।

তবে লালমনিরহাট কারাগারে আটক থাকা ২০ জেএমবি সদস্য ও তাদের নিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চাইলে জেল সুপার কিশোর কুমার নাগ কোনও কথা বলতে রাজি হননি। তবে এরআগে তিনি সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছিলেন, তাদের কারাগারে ২০জন জঙ্গি রয়েছে। তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য একটি উড়োচিঠি এসেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। পরে কারা মহাপরিদর্শকের নির্দেশে কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

 

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ও জেল সুপারের কাছে হুমকির চিঠি আসে। এরপর গত ১২ সেপ্টেম্বর টেলিটকের একটি নম্বর থেকে মোবাইলে কল পেয়েছি। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে জানানো হয়েছে। এছাড়া লালমনিরহাট সদর থানায় জিডি করা হয়েছে।’

 

তিনি আরও সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ আমরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।

 

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সব সময়ই নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে থাকি। এখনও তাই করা হয়েছে। তবে লালমনিরহাট জেলা কারাগারের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি কোনও কথা বলতে রাজি হননি।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone