ফেলানী হত্যার এক যুগ (১২বছর) পর ছোট ভাই মোঃ আরফান হোসেন (২১) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)তে চাকরি পেলেন।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের কুচবিহার সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই মোঃ আরফান হোসেন এবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র এ চাকরি পেলেন।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ২০২৫ তারিখে তিনি লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ২০২৫ তারিখে ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম পিএসসি মোঃ আরফান হোসেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগপত্র প্রদান করেন।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম পিএসসি বলেন, বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে রয়েছে। ফেলানীর ছোট ভাই অত্র ব্যাটালিয়নে অনুষ্ঠিত বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে তিনি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।
তিনি আরও বলেন, সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের কুচবিহার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ১৫বছরের কিশোরী ফেলানী খাতুন। সীমান্ত হত্যার সেই মর্মস্পর্শী দৃশ্য দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ফেলানীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ন্যায় বিচারের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
ফেলানীর ছোট ভাইয়ের এই নিয়োগ যেন দীর্ঘদিনের এক চাপা বেদনার মাঝে আশার দীপ্তি এনে দিয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়দের বিশ্বাস, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করে যাওয়া বোনের অসমাপ্ত স্বপ্ন একদিন সে পূর্ণ করবে।
ফেলানীর ভাই মোঃ আরফান হোসেন আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল দেশের জন্য কাজ করবো। ফেলানী হত্যার পর মানুষ যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল বিজিবিতে যোগ দেওয়ার। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। বিজিবিকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। দোকান করে দিয়ে সহায়তা করেছে। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেলো। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।
উল্লেখ্য যে, ফেলানীর ছোট ভাই মোঃ আরফান হোসেন। বয়স ২১বছর। শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2025 আলোর মনি. All rights reserved.