(আমি শান্তিতে বসবাস করতে চাই)
-সাকি:
সেলিমা সব সময় বলে,
আল্লাহর জমি, আল্লার ওয়াস্তে হাসপাতালে দান করে দিয়েছি।
নাম থাকলো কি না, সেটা নিয়ে ভেবো না।
ওই মানুষগুলো তোমার সাথে লাগে কেন?
বিশেষ করে ময়নুল ইসলাম?
ওর বউ তো শুধু তোমার বিচক্ষণতায় সেদিন, অপারেশন থিয়েটার থেকে বেঁচে গিয়েছিলো, সেই কৃতজ্ঞতা বোধটাও নাই।
আসল কথা কি জানো কাজল, পাচ-ছয়মাস বেতন বাকী স্টাফদের। এর মধ্যে
রাতুল ফিজিওথেরাপিষ্টকে টেলিফোনে বলে, তোমার চাকরীর দরকার নাই। এক তারিখ থেকে আসবা না। আমাদের লালমনিরহাটের প্রদীপ দাস, ওনার কথায় সব চলবে।
বাকী চৌদ্দজন ডায়াবেটিক সমিতির সদস্য যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত তাদের কোন দাম নাই।
মনে মনে হাসি।
ডা. কাশেম সর্বোচ্চ ভোট পেলো পরপর তিনবার,
তারচেয়ে একশ ভোট কম যার,
সে কি-না নির্লজ্জ ক্ষমতার বহিপ্রকাশ দেখায়।
বললাম, লিখিত কাগজ দিতে বলো।
তখন চেপে গেছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ধানমন্ডি থেকে পাশ করা একজন ফিজিওথেরাপিষ্ট যে কি-না এসে কতো মানুষের সেবা দিয়েছে, তাকে দেখতেই পারে না।
কিন্তু সেবা নেবার বেলায় মুখিয়ে থাকে।
মানুষের সাথে প্রভুত্ব করার এ ধরনের একটা পারভারশন কেন তার মনে কাজ করে?
সে দ্যাখে, লালমনিরহাটে খালি হাত পা নিয়ে এসে, জাকি আর সেলিমা কোথায় চলে গেলো। ছেলে-মেয়ে বিদেশে থাকে।
পড়ালেখা শিখে উন্নত বিশ্বে টিকে আছে কোনো পেরেশানি ছাড়া।
চাকরী প্রাকটিস সব ছেড়ে বিদেশে থিতু, নাহ্ এদের শান্তিতে থাকতে দেয়া যাবে না।
লাগো এদের পিছনে।
কিন্তু মজার বিষয় হলো, আমাদের নাতনীদের সঙ্গ দেবার জন্য আমরা অষ্ট্রেলিয়া আমেরিকা যেয়ে থাকি।
তাঁদের কমপ্যানি দেই। কাজ করি খাই বেড়াই আনন্দ করি।
এ জীবন যেমন উপভোগের তেমনি অনেক কাজ কর্মের মাঝে কোথা দিয়ে সময় চলে যায় বুঝতেই পারি না।
এই সব অদ্ভূত লোকদের কর্মের বিষয়ে ভাববার সময় কই?
*****
এরা তো এসব বিষয় রাজাকারদের মতো করে, চুপ করে, চুরি করে। সমাজের বিরুদ্ধ স্রোতে এরা লড়াই করে।
মানুষের কাছ থেকে পায় ঘৃণা, থুথু এবং শেষমেষ এরা নির্লজ্জের মতো পলায়ন করে।
জীবনে অসফল মেরুদন্ডহীন, এই সব পতঙ্গের পিছনে ধাওয়া করার সময় কই?
নিজেদের পরিজন, সন্তান কারো কাছে যদি সামান্য তম শ্রদ্ধা পেতো, তাদের কৃত কর্মের জন্য।
হায়রে পাতকী মানুষ। শিক্ষা নেয় না। নিতে পারে না।
******
ময়নুল ইসলাম আবার শয়তানি শুরু করেছে বুঝে -না, না বুঝে?
পৌর ট্রেড লাইসেন্স “ডায়াবেটিক হাসপাতাল“ নামে কেন করলো,
মিটিং-এ এটা জানতে চাইবেন।
প্রত্যেক স্টেপ এ রেজলুশন করে, কাজ করা হয়েছে।
জমিদাতার জমির দাম ১কোটি টাকা, ডিসির ভ্যলুয়েশন দেয়া আছে, পি পি পি তে।
আমাদের গঠণতন্ত্র অনুযায়ী ৩০লক্ষ টাকার বেশী হলে, তার নামে হাসপাতাল হবে।
ওয়ার্ড হবে পাঁচ লক্ষ টাকায়, কেবিন হবে তিন লক্ষ টাকা অনুদানে, বেডের নামকরনের জন্য এক লক্ষ টাকা।
আমাদের হাসপাতাল ১৯৯৩ এ ডায়াবেটিক কেন্দ্র নামে চালু হয়েছে বর্হিবিভাগীয় কার্যক্রম দিয়ে, সদর হাসপাতালের পাশে, তৎকালীন লালমনিরহাট এর ডিসি মরহুম কাজী ফরিদ আহমেদ এর ঐকান্তিক ইচ্ছার বাস্তবায়নের জন্য।
আমি ডা. জাকি ও ডা. সেলিমা কুমিল্লা যেয়ে ডা. জোবায়দা হান্নান এর প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা ডায়াবেটিক হাসপাতাল দেখে আসি।
এবং ডায়াবেটিক কেন্দ্র প্রশাসনের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে চালু হয়।
পরে স্থানাভাবের কারনে, শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে, আল নাহিয়ান ট্রাস্টের পূর্ব পাশে কার্যক্রম চালু করা হয়,
পরে সোনালী পার্কে ডা. সেলিমার ক্রয়কৃত জমিতে একটি ঘরে হাসপাতালের কার্যক্রম চলতে থাকে ২০১১ সাল পর্যন্ত।
এর মধ্যে জমি রেজিষ্ট্রিমূলেদান করেন এক একর (১০০ শতক) ডা. সেলিমা।
হাসপাতালের পিপিপি রেডী হলে,
হাসপাতাল নির্মাণ ২০১১ সালে শুরু হয়।
পি ডাব্লিউ ডি র মাধ্যমে, ওপেন টেন্ডারে কাজ পেয়ে কন্টাকটর কাজ শুরু করেন।
২০১৫ এ নানান সমস্যার মাঝে ও হাসপাতালের কাজ শেষ করে হ্যান্ডওভার হয়।
এই দীর্ঘ ইতিহাসের পর,
হঠাৎ করে ময়নুল ইসলাম কি পৌর লাইসেন্সে নাম বদলাতে পারে?
জমি দান করা হয়েছে ডা. সেলিমা কর্তৃক, ডায়াবেটিক সমিতির নামে ২০১১ সালে।
সেই জমিকে কেন্দ্র করে, পিপি করা হয়েছে।
২০১৫ তে হাসপাতাল এর কাজ দায়সারা ভাবে শেষ করে, হ্যান্ড ওভারের পর,
আমাদের ইসির সভায় নামকরনের প্রস্তাব- জমিদাতা হিসাবে, ডা. সেলিমার নাম সন্নিবেশ করা হয়। হাসপাতালের দৃশ্যমান স্থানে ডা. সেলিমা ডায়াবেটিক ও জেনারেল হাসপাতাল, হাসপাতালের প্রেসক্রিপশন, প্যাথলজি ফ্রম, রোগীদেখার টাকার মেমো, অফিসিয়াল প্যাড এবং সব ওয়ার্ড কেবিন ও বেডের দাতাদের নামে নামকরনের জন্য অনারবোর্ড লাগানো হয়।
ময়নুল ইসলাম কি এখন তাঁর ইচ্ছায় সব বদলে দেবেন?
কার সাথে পরামর্শ করে?
কোন অধিকারে?
১৯/৮/২০২০,
টিনটন ফলস,
নিউজার্সি, ইউ এস এ।
(সাপ্তাহিক আলোর মনির সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, সাপ্তাহিক আলোর মনি কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার সাপ্তাহিক আলোর মনি নেবে না।)