লালমনিরহাটে ডাকঘরের অফিসিয়াল নিয়ম অনুযায়ী পার্সেল নামীয় ব্যক্তি ছাড়া অন্য কাউকে পার্সেল দেওয়া যাবেনা বলায়! সেই আক্রশে পোস্টম্যান মোঃ বেলাল মিয়া (২৭) কে আটক করে গালি গালাজসহ বেধরকভাবে মারপিট, ফুলা জখম করেছে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ৪৫মিনিটে লালমনিরহাটের বিডিআর হাট রোড আলোরুপা সিনেমা হল রোড এলাকার যমুনা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ওই ঘটনায় ডাক বিভাগের পোস্টম্যানকে মারধর ও ফুলা জখমের অভিযোগে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল হয়েছে।
লালমনিরহাট প্রধান ডাকঘরের পোস্টম্যান মোঃ বেলাল মিয়া স্বাক্ষরিত লালমনিরহাট সদর থানায় অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, আমি লালমনিরহাট প্রধান ডাকঘরে উক্ত পদে নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করিয়া আসাকালে ১৮/০৯/২০২৩ইং তারিখ দুপুর অনুমান ১২.৪৫ ঘটিকার সময় একটি ভারী পার্সেল ডেলিভারি করার জন্য আমি ও আমার সহকর্মী মোঃ আনোয়ার হোসেনসহ লালমনিরহাট যমুনা ক্লিনিক এন্ড ডায়ানোসিস সেন্টারে যাইয়া পার্সেল এর মালিক মোঃ ইসমাইলকে খোজার জন্য কাউন্টার ম্যানেজারের অফিসে যাইয়া মোঃ ইসমাইলের খোঁজ জানতে চাইলে তিনি পাশের রুমে দেখে দেন। ইহার পর কাউন্টারের পাশের রুমে মোঃ ইসমাইল নামের ব্যক্তি না থাকায় অন্য এক ব্যক্তি পার্সেলটি গ্রহণ করতে চায়। তখন আমি অফিসিয়াল নিয়ম অনুযায়ী পার্সেল নামীয় ব্যক্তি ছাড়া অন্য কাউকে পার্সেল দেওয়া যাবেনা বলিয়া আমি পার্সেলটি নিয়ে ফিরত আসার মুহুর্তে পার্সেল না দেওয়ার আক্রশে উক্ত অফিস কক্ষের ব্যক্তি কয়েক জনের নাম ধরিয়া ডাক দিলে সঙ্গে সঙ্গে ৭/৮ জন ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী যুবক ছেলেরা আমার সামনে আসিয়া ঘিরিয়া ধরে অন্যায় ভাবে আটক করে এবং পার্সেলটি চায়। তখন আমি পার্সেলটি ব্যক্তি বিহীন অন্য কাউকে দিতে অস্বীকৃতি জানাইলে উক্ত ক্লিনিকের অজ্ঞাতনামা কাউন্টার ম্যানেজার উক্ত অজ্ঞাতনামা ছেলেদের আমার পিছনে লেলিয়ে দিয়ে সকলে মিলে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করিতে থাকে। এক পর্যায়ে উক্ত অজ্ঞাতনামা ২জন ছেলে আমার দুই হাত চাপিয়া ধরে অন্যান্য ছেলেরা আমাকে বেধরকভাবে মারপিট করিয়া আমার বুকসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলা জখম করে এবং পরনের শার্ট ছিরিয়া ফেলে। ঐ সময় অজ্ঞাতনামা একটি ছেলে আমার পরনের প্যান্টের পিছনে থাকা মানি ব্যাগ যাহার মধ্যে নগদ ১১,৩০০ টাকা ও কিছু অফিসিয়াল জরুরি কাগজপত্র সহ মানি ব্যাগটি ছিনিয়া নেয়। ঐ সময় বাহিরে দাড়িয়ে থাকা আমার সহকর্মী আনোয়ার হোসেন দ্রুত ঘটনাস্থলে আসিয়া দুষ্কৃতিকারী ছেলেদের কবল হইতে আমাকে বাচানোর চেষ্টা করে। তখন অজ্ঞাতনামা একজন ছেলে তার দুই হাত দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গলা চিপিয়া ধরে শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্টা করে। ঐ সময়ে আনোয়ার হোসেন দিশাহারা হইয়া ৯৯৯ ফোন দিয়া যোগাযোগ করিয়া লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা আমাকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনার বিষয়ে লালমনিরহাট প্রধান ডাকঘরের কর্মরত শ্রী হরিদাস দেবনাথ, রেজিস্ট্রি ইনচার্জ, মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, হেড পোস্টম্যান, শ্রী স্বপন চন্দ্র রায়, পোস্টম্যানসহ আরও অনেককে বিষয়টি জানাই। আমি আমার জখমের চিকিৎসা করিয়া আমার অফিস কর্তৃপক্ষের সহিত আলোচনা করে থানায় অভিযোগ দিতে কিছুটা বিলম্ব হলো।
এদিকে পোস্টম্যান মোঃ বেলাল মিয়াকে চিকিৎসা করাতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে যেতে হয়। বহির্বিভাগের রোগীর টিকিট রেজিঃ নম্বর ২৯৬৭৪/৮২। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পর তিনি লালমনিরহাট সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে মর্মে জানা গেছে।
লালমনিরহাট প্রধান ডাকঘরের পোস্টম্যান মোঃ বেলাল মিয়া বলেন, আমি লাঞ্চনার উপযুক্ত আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচার চাই।
লালমনিরহাট প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার আফলাতুন বানু বলেন, ৯৯৯ কল দিয়ে উদ্ধার করে, চিকিৎসা নিয়ে থানায় অভিযোগ করেছি।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.